তৃতীয় বর্ষ ।। সপ্তদশ ওয়েব সংস্করণ ।। ১৮ অগ্ৰহায়ণ ১৪২৯ ।। ৫ ডিসেম্বর ২০২২


পিঁপড়ের মরণ এলে ডানা গজায়। সেই ডানা নিয়ে আগুনের দিকে অথবা জলাশয়ের দিকে উড়ে যায় সে। অথবা ঋষি এবং মূষিকের গল্পটা অনেকেরই জানা থাকবে হয়তো। মূষিক থেকে কিভাবে ধীরে ধীরে সিংহে পরিণত হয়েছিল সে। তারপর সিংহ হয়ে ঋষিকে গিলে খেতে গিয়ে পুনরায় পরিণত হয়েছিল মূষিকে। ঋষির ধৈর্যসীমা পার করে যাওয়ার ফলস্বরূপ ঋষির মুখ থেকে উচ্চারিত হয়েছিল, "পুনর্মূষিক ভব।" আর সঙ্গে সঙ্গে মূষিকে পরিণত হয়েছিল সিংহ।
    বাংলার গ্রামাঞ্চলের মানুষ ঋষি তুল্য একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাও যদি আবার পুরুলিয়ার মানুষ হয়ে থাকেন। কিন্তু তাদেরও তো একটা ধৈর্যসীমা থাকবে?
          তুমি মূষিক ছিলে। বিড়ালের হাত থেকে বাঁচাতে বিড়াল। সিংহের হাত থেকে বাঁচাতে সিংহ বানিয়েছেন মানুষ। তাই বলে মানুষকেই খেতে যাবে?
           পুনরায় মূষিক হওয়ার সময় এসেছে তোমার। মূষিক তোমাকে হতেই হবে। নতুবা নিজের অফিসার দ্বারা অ্যাপ্রুভড হওয়া লিস্ট বাতিল করে পুনরায় নিজের মতো করে সার্ভে করানোর ইচ্ছে জাগে?
           এর অর্থটা কি এই নই যে, যে সকল অফিসারেরা তা অ্যাপ্রুভড করেছিলেন তাঁরা গাঁজাখোর ছিলেন? তাঁরা ভুল রিপোর্ট পেশ করেছেন? অতএব নতুন করে সার্ভে করানোর আগে সেই মহামান্য অফিসারদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। আর তা না করা হলে ধরেই নিতে হবে সর্ষের ভেতরে ভূত রয়েছে। অর্থাৎ এটা কেবলমাত্র জনগণের কাছ থেকে বাড়ি দেওয়ার নাম করে টাকা খাওয়ার একটা চক্রান্ত।
             প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্লাসের ফাইনাল লিস্টে নাম এসে যাওয়ার পর কয়েকদিনের মধ্যে যখন টাকা ঢুকবে, ঠিক সেই মুহূর্তে রাজ্য সরকারের এইরকম একটা বিড়ম্বনা তৈরি করার অর্থটা ঠিক কি এটা কি জনগণ অনুধাবন করতে পারবেন না?
            দীর্ঘ ছয় মাস ধরে যে লিস্ট তৈরি হয়েছে তাকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার সাত দিনের মধ্যে ত্রিস্তরীয় সার্ভে করে উঠতে পারবে সঠিকভাবে? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।


উত্তম মাহাত, সম্পাদক 


______________________________________________
যাঁদের লেখায় সমৃদ্ধ হলো এই সংস্করণ
______________________________________________
সুজন পণ্ডা / শ্রীভূষণ / তপন পাত্র / অঙ্কন রায় / সুবোধ পরামানিক / সুশান্ত সেন / গীতশ্রী সিনহা / কুমারেশ তেওয়ারী / শংকর ব্রহ্ম
______________________________________________



বিরুৎ ও গুল্ম

সুজন পণ্ডা

১.
আমার আঙুল জড়িয়ে
বেড়ে উঠছে একটি অপরাজিতা লতা,
ঘন নীলের স্বপ্ন
সবুজে সজীব একটি শিশু।
আমার গোড়ালি ভিজিয়ে বইছে
একটি আদর কাঙাল নদী।
আঁজলা ভর্তি জল,
মাছ
রূপোলী বালিতটের শীর্ণ শৈশব।

এই পৃথিবীর স্নিগ্ধ যা কিছু,
সব কিছুই আমার সন্তান মনে হয়।
আমি একা পিতা।
এই পৃথিবী আমাকে জড়িয়ে বড় হচ্ছে।
আমিও বেঁচে আছি ঘুমন্ত বিস্ময় কোলে।


২.
একটি নিবিড় বিকেল দাও,
একটি শুকনো পাতায় ভরা মাঠ।
আমাকে ছুঁয়ে ক্রমশ নেমে এসো
কাঁধের ওপর। বুকের ভেতর।
তোমার জন্যে শিরা কেটে
দিগন্ত ভাসিয়ে
এক্ষুনি একটা সূর্যাস্ত আঁকতে পারি।
ফুঁ দিয়ে ছিঁড়ে ফেলতে পারি
শার্টের সবকটা বোতাম।
আমাকে এক বুক টাটকা হাওয়া দাও,
কাঁঠালী চাঁপার গন্ধে ভারী হাওয়া।
একটি নিবিড় বিকেল। 
আমাকে এক্কেবারে এলোমেলো করে দাও, 
আমি খুব গুছিয়ে ভালোবাসতে চাই।








শেষ দৃশ্য থেকে

শ্রীভূষণ 


বেয়াড়া সন্ধ্যার দামালপনা আটকে গেছে — প্রত্নগহ্বরে টাঙানো
রাস্তার খোলা পিঠে দলা পাকানো মশারির গা ঘেঁষে
খানিকটা পোড়া ভাতের গন্ধ মেখে বিকারগ্রস্ত রাতের রঙচটা রেলিংয়ে
মরচে পড়া কাঁটাতারের সন্ধিলগ্নে — আসন্ন সংকেতে !

দৃশ্যের শুরুটা আমার অজানা।
কাঁচা ঘুমভাঙা শিশুটার মতো থমকে গেলাম —
চলতি পথের মোড় পেরিয়ে শেষ মেট্রো চলে যাওয়ার আগেই।
কানে ভেসে এলো — ঘাড়গুঁজে নীরবতা পালনের তেলচিটচিটে রাত্রির 
চেরা চেরা গলায় বেসুরো অসুখের বাঁধভাঙা গর্জন — ‘নামেই মরদ !
কামের বেলায় নাই, প্যাটের ভাত জুটাইতে পারস্ না, তার আবার বুলি !
তোর মত মরদ লিয়ে আমি থাকবো লাই —
আমার ভাত কাপড় হামি জুটাই লিবো।’

বাঁধ  ভাঙলো — সভ্যতার আলোস্তম্ভের আঁধারমূলে
নিজের সজোরে আঘাতে — এতোদিনের এঁটে থাকা অশান্ত সাদা শাঁখা 
টুকরো হয়ে ছড়িয়ে গেল হৃদয়ে ঠাসা গোলা বারুদের অশান্ত  বিস্কোরণে। 

দৃশ্যের শুরুটা আমার অজানা। 
অর্ধনগ্ন শিশুটার রূপকথা ভেঙে গেলো — সদ্য বাঁধভাঙা বন্য মায়ের
এলোপাথাড়ি চড়ের অসম ছোঁয়ায় ! কিছু বুঝে ওঠার আগেই —
মায়ের কোলে টাল সামলাতে সামলাতে যবনিকা নামলো 
দৃশ্যান্তরের মোড় ঘুরে।

দৃশ্যের শেষ থেকে মরদটি তখনও বিড়ি টেনে চলেছে ফ্যালফ্যাল করে —
দৃশ্যের শুরুটা আমার অজানা !









গরামঠাকুর
        
             তপন পাত্র


এপারে গরাম
ওপারে বাঘু্ৎ

লত পলাশের মাঝে আজও
 দু'চারটা শালগাছ

নরম মাটি টিপে টিপে হাতে গড়া 
হাতি ঘোড়া
   আগুনে পোড়া

ঘোড়া অন্ধকারে নড়ে চড়ে
অন্ধকারে থান বদল হয়

গভীর নিশীথে বাঘের পিঠে সওয়ার হয় বাঘুৎ

       তিমিরাভিসার
  দেব-দেবীর মহাসংগম

ওরাই
আমাদের ডুংরি-টিলায়
                          বন-বাদাড়ে
         আদম আর ইভ।








অঙ্কন রায়ের কবিতা

১.
ছোঁয়া ২


আমার  ভালোবাসার বারান্দাটায় শূন্য লেগে আছে।
জানিস  দিনের পরে দিন কেটে যায় ধূ ধূ মরুর আঁচে।
আমি  ছুঁইনি তোদের যুগযুগান্ত, আসিসনি একজনও।
তোরা  এমন করে বলতো, কবে বাঁচতে পারে মনও!

সেদিন  পাখপাখালির পরশ লেগে রংবাহারি ভোর,
দেখি  সোনার রোদে খুললে পরে দিগঙ্গনার দোর...
হাসে  উল্লসিতা পৃথ্বী, তবু মড়ক লাগার ধাঁচে
আমার  আদরছোঁয়া বারান্দাটায় শূন্য লেগে আছে। 
আমার  ভালোবাসার বারান্দাটায় শূন্য লেগে আছে।




২.
ভালোবাসা 


যদিও আকাশ তুমি
নীল খাম চেনাও আমাকে,
না আসা চিঠির কথা
তবু কিছু মেঘ দিয়ে ঢাকো।
অকারণ কান পেতে
কত দিন, কত রাত পার...
আমি যাকে ভালোবাসি
সে আমায় ভালোবাসে না কো।

যদিও উজান নদী
বয়ে যাও আমার হৃদয়ে,
দু'য়েকটা ঢেউ তবু
ওপারে কেন যে বেঁধে রাখো!
অবুঝ মনের পথ
শুধু মরীচিকা খুঁজে মরে...
আমি যাকে ভালোবাসি,
সে আমায় ভালোবাসে না কো।

যদিও বনানী জুড়ে
ও গাছ, আমায় দাও ফুল,
নিতে চেয়ে মুঠো ভ'রে
পেরোতে পারি না মন-সাঁকো।
প'ড়ে যায় ইতিউতি 
পাপড়িরা টুপটাপ জলে...
আমি যাকে ভালোবাসি,
সে আমায় ভালোবাসে নাকো। 








রসাতল

সুবোধ পরামানিক


তোমার কোনোখানে  
এক টুকরো মায়া-মমতা নেই জানি।
তাই তোমার জন্য কৃষ্ণগহ্বর খুঁজতে বেরিয়েছি
এবার হয়তো সব কীর্তি রসাতলে যাবে বলা যেতে পারে।

লিঙ্গ ভেদে রসাতল নিয়েও মাপা জোকা
শুরু হয়েছে যখন;
তখন তোমার আর কতটুকু ক্ষয়।

আমাদের আঁশ বঁটিতে, আমিষ ও নিরামিষ
দুই-ই রান্না হয় যখন
তোমার ঝালে ঝোলে অম্বলে তখন
রসাতলের রস মিশে যায়।







চোখ

সুশান্ত সেন


তোমার কুয়াশা চোখে ছানি পড়ে আছে 
দেখেও দেখনা তুমি 
তুমি এক বিষণ্ণ মানব
প্রতিদিন মৃত্যু আসে অবোধ আবেগে
দাঁড়িয়েছে গৃহপ্রান্তে। 
জর্জরিত হয়ে থাকে তোমার সমাজ
বিপন্ন মানব শিশু।
প্রতিবাদী মন তবু ও ছলনা করে
হিমেল রাত্রির কাছে করে সমর্পণ।
কর্মহীন শিক্ষাহীন স্বাস্থ্যহীন
জনতার সারি নীরবে দন্ডায়মান।
শাসক সকাল তোমাদের কুয়াশা চোখে 
ছানি পড়ে আছে
দেখেও দেখোনা তুমি।









ভারতবিদ্যা

গীতশ্রী সিনহা 


পূর্বে অনাদিবাবু লম্বা ও কালো ছিলেন
তাঁর আত্মার একটা কুচো টুকরো জেগেছিল 
বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে তাঁকে এই অক্ষরমালার দায়িত্ব নিতে হলো
বিদ্যার চাপে তিনি ক্রমশ কুঁজো - রোগা হ'তে শুরু করলেন
ধূমপান বন্ধ হ'লো,অক্ষরমালার শরীরে আগুন লাগার আশঙ্কায় 
প্রাচীন অক্ষরমালা তাঁর হাড় -মজ্জা ভেদ করে ঢুকে গেলো হৃদয়ে
অন্ধ কুঠুরির কল্পকথা ভুলতে বসলেন অনায়াসে 
নিজের চারপাশে তুলে দিলেন ফণি মনসার বেড়া,খড়ের ছাওয়ায়
শুরু হলো সন্ন্যাস - জীবন মসৃণ বাতাসে
ভেড়ার মাংসের বদলে পেঁপে ও কাঁচকলার মাংস প্রিয় হয়ে উঠলো 

এখন উড়োজাহাজ চ'ড়ে বহু জ্ঞানীজন তাঁর কাছে আসে, বিদেশি পর্যটকগণও, 
অক্ষরমালার সাল- তারিখ ইতিহাস বলে দেন অনাদিবাবু
এমনকি জটিল উদ্ধৃতগুলোও বলে দিতে পারেন পরের পর 
এদিকে, বিদ্যার চাপে তিনি ক্রমশ সাদা ও বোবা হতে শুরু করলেন 
আমোদে উইপোকাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতালেন...  
তাঁর গা থেকে বের হতে থাকলো অসংখ্য পোকামাকড়ের ডানা
নাকের ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো বিশাল এক সাংস্কৃতিক -শুঁড়







কিংবদন্তীর বেতাল

কুমারেশ তেওয়ারী


ধরো কবিতার সন্ধানে খুব ঘুরে বেড়াচ্ছ 
এখানে সেখানে। জঙ্গলে গিয়ে বসে থাকছো 
গাছের শিকড় ছুঁয়ে। কান পাতছো বাকলে
যদি শোনা যায় কবিতার পায়ে বাঁধা
বিমূর্ত নূপুরের ধ্বনি--- 

ময়ূরের নাচের ভেতরে গিয়ে খুঁজতে চাইছো 
কাম নামক শব্দের চৌষট্টি কলাটি---
ময়ূরীটি সিদ্ধবাক, ডেকে উঠতেই
শব্দব্রহ্ম নিয়ে কবিতারা ছিটকে যাচ্ছে
মহাশূন্যের দিকে---
কোথাও কোনও এক গেরস্ত উঠোনে হেসে উঠছে
তারে মেলা একটি কল্কেপেড়ে শাড়ি---

ফিরে আসছ লোকালয়ে
দেখছো সেখানে কত সমুদ্র ফুটেছে--- 
আর মানুষেরা ভিড় করে কিনছে মুখোশ। 
মন্দিরে মন্দিরে বিগ্রহ মূর্তিরা বন্ধ চোখ 
কি যেন ভাবছে আকাশপাতাল---

বিক্রমাদিত্যের কাঁধ থেকে উড়ে গিয়ে
পুরোনো সেই গাছে উলটো ঝুলে পড়ছে 
                                         কিংবদন্তীর বেতাল---








ব্যক্তিগত গদ্য


একটি কবিতার জন্ম ও তার রূপান্তর বৃত্তান্ত 

শংকর ব্রহ্ম

-------------------------------------------------------------------




             কবি ও অকবি বন্ধুদের সঙ্গে কিছুক্ষণ গল্প করে , চায়ের দোকান থেকে এক কাপ চা খেয়ে , রাত ন'টার সময় বাড়ি ফেরার পথে একদিন ,সারা জামায় ফ্রিল দেওয়া সাদা ফ্রক পরা একটি সুন্দরী ফরসা মেয়েকে রাস্তায় দেখে ,ঠিক পরীর মতো লাগছিল।লক্ষ্য করলাম , কেউ কেউ কামাতুর চোখে তাকে দেখছে , পরীরও নজরে পড়েছে সেটা। আর তা দেখতে দেখতেই একটা পংক্তি এসে মাথায় টোকা মারল।

      

" ভিনদেশী এক পরী এসে
                       আমায় শুধু প্রশ্ন করে
         এইখানে কি মানুষ থাকে?"

 

প্রশ্ন করলেই আমি তাকে সঠিক উত্তর দেব , তার কোন মানে নেই,আর তাকে সঠিক উত্তর দিতে যাবই বা কেন? 

কারণ সে ভিনদেশী ,স্বদেশবাসী নয়।

এই কথাটা মনে হতেই ,পরের পংক্তিটি এসে জুড়ে বসল ,পূর্বের পংক্তিটির সাথে।



 " ভিনদেশী এক পরী এসে
                       আমায় শুধু প্রশ্ন করে
    এইখানে কি মানুষ থাকে ?
                  আমি তাকে কথার পাকে 
     জড়িয়ে ফেলি,
            মানুষ যে নেই, বলি না তাকে।"


কথাটা বলেই মনে হল ,ভিনদেশী পরীকে তো ফাঁকি দিলাম , কিন্তু তাকে ফাঁকি দিলে কি হবে ,নিজে তো মনে মনে জানি ,সত্যটা কি !

তাই ,পরের কথাগুলো এ'ভাবে চলে আসে অনাযাসে -



     " ভিনদেশী এক পরী এসে
                       আমায় শুধু প্রশ্ন করে
    এইখানে কি মানুষ থাকে?
                  আমি তাকে কথার পাকে 
     জড়িয়ে ফেলি,
              মানুষ যে নেই,বলি না তাকে।
        মানুষ নামক জন্তু আছে 
                                       ধারে কাছে
        স্বার্থ সুখে সমাজ জুড়ে 
                যারা কেবল একলা থাকে।"


কবিতাটা এখানেই শেষ করব ভেবে ছিলাম ,কিন্তু মনে হল ,কবিতাটা যেন পূর্ণতা লাভ করেনি ,আরও কিছু দাবী আছে তার কবির কাছে তার পূর্ণতা লাভের জন্য ,ভাবতে গিয়ে পরের অংশটা এ'ভাবে এসে যায় স্বাভাবিক ভঙ্গিতে -



     "বিদুষী এক নারী এসে 
                  আমায় কেবল প্রশ্ন করে
       এইখানে কি অমানুষ থাকে
                 আমি কিছুই বলি না তাকে।"


 শেষ পর্যন্ত লেখাটা দাঁড়াল, এ'ভাবে -


  " ভিনদেশী এক পরী এসে
                       আমায় শুধু প্রশ্ন করে
    এইখানে কি মানুষ থাকে?
                  আমি তাকে কথার পাকে 
     জড়িয়ে ফেলি,
              মানুষ যে নেই,বলি না তাকে।
      মানুষ নামক জন্তু আছে 
                                       ধারে কাছে
        স্বার্থ সুখে সমাজ জুড়ে 
                যারা কেবল একলা থাকে।                    
         বিদুষী এক নারী এসে 
                     আমায় কেবল প্রশ্ন করে,
          এইখানে কি অমানুষ থাকে
                  আমি কিছুই বলি না তাকে।"


      বাড়ি ফিরতে ফিরতে কবিতাটা মনে মনেই তৈরী হয়ে যায় , মাথার ভিতর। বাড়ি ফিরে এসে দেখি ,ছাদে জ্যোৎস্না থৈ থৈ করছে। আজ কোজাগরী পূর্নিমা , লক্ষ্মীপূজা। কথাটা মনে পড়তেই কবিতার অভিমুখ বদলে গেল আচমকা । আগের কবিতাটির রূপান্তর ঘটে গেল। কবিতাটি এবার এ'ভাবে নতুন করে লেখা হল।


মর্তবাসী

শংকর ব্রহ্ম

-----------------------------


স্বর্গ থেকে লক্ষ্মী এসে   
             মর্তবাসী জেনে,আমায় প্রশ্ন করে,
এইখানে কি মানুষ থাকে?
                         আমি তাকে কথার পাকে 
জড়িয়ে ফেলি,
                    মানুষ যে নেই,বলি না তাকে।
মানুষ নামক জন্তু আছে,ধারে কাছে
                         মান হুঁশ সব হারিয়ে যারা কেবল নিজের স্বার্থ সুখে 
                      সমাজ জুড়ে একলা থাকে।
পাতাল ফুঁড়ে অলক্ষ্মী এসে
                          আমায় কেবল প্রশ্ন করে
এইখানে কি অমানুষ থাকে?
                      আমি কিছুই বলি না তাকে।


 [ 'ব্যক্তিগত গদ্য' - শংকর ব্রহ্ম ]





                                                       আমাদের বই








সম্পাদক : উত্তম মাহাত
সহায়তা : অনিকেতের বন্ধুরা
অলঙ্করণ : শেখর রায়ের পেন্টিং, আন্তর্জাল
যোগাযোগ : হোয়াটসঅ্যাপ - ৯৯৩২৫০৫৭৮০
ইমেইল - uttamklp@gmail.com






মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র ।। সন্তোষ রাজগড়িয়া

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র শিল্প ।। মুকেশ কুমার মাহাত

পঞ্চম বর্ষ ।। তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ ।। ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ০২ অক্টোবর ২০২৪