ছবি প্রদর্শ-শালা। আলোকচিত্র ।। শুভাশীষ গুহ নিয়োগী
শুভাশিস গুহ নিয়োগী ১৯৬৫ সালে পশ্চিম বঙ্গের বাঁকুড়া জেলার রায়পুর গ্রামের এক অত্যন্ত সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
এরপর তিনি শান্তিনিকেতন থেকে উচ্চশিক্ষা শেষ করে শিক্ষকতার পেশাকে বেছে নেন। তবে সাংস্কৃতিক বিষয়ে তাঁর আগ্ৰহ অতুলনীয়। তাই তাঁর নানান কাজে ফুটে ওঠে সংস্কৃতির ঝলক। শিক্ষা ক্ষেত্রে পাঠদান ও এলাকার সার্বিক উন্নয়নে তাঁর একাগ্রতা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই কাজ ২০১৬ সালে তাঁকে এনে দিয়েছে রাজ্য সরকারের 'শিক্ষা রত্ন' সম্মান আর ২০১৭ সালে জাতীয় শিক্ষক হিসেবে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার।
এইসব কাজকর্মের মাঝেই ২০১০ সাল থেকে চেপে বসে আর এক নেশা। ছবি তোলার নেশা। সেই থেকেই হাতে খড়ি এই জগতে। তারপর ক্রমে ক্রমে পৌঁছে যান উন্নতির চূড়ান্ত শিখরে। ২০১৫ সালে পশ্চিম বঙ্গ সরকারের বিশেষ পুরস্কার পান ফটোগ্রাফিতে। সেই ছবিতে উঠে এসেছিল পুরুলিয়া জেলার গ্রামীণ জীবন।
গগনেন্দ্র প্রদর্শশালা, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন প্রভৃতি বেশ কিছু স্থানে প্রদর্শিত হয়েছে তাঁর ছবি। সর্বোপরি ওঁর ক্যামেরা কথা বলে। সাটার টিপে তুলে আনেন অসাধারণ সব মুহূর্ত। ক্যামেরার লেন্স দিয়ে ছবি আঁকেন বিচিত্র ভাবনায়।
ভারতবর্ষের সবথেকে বৈচিত্র্যপূর্ণ ধর্মীয় দর্শনীয় স্থানের তালিকায় সর্বাগ্রে যে নাম আসে তা হলো বেনারস। এখানকার গঙ্গার ঘাট পৃথিবী বিখ্যাত। তাই, কি চিত্রশিল্পী, কি আলোকচিত্রশিল্পী, সকলেরই একটা প্রবল আগ্রহ বেনারসের ঘাট নিয়ে কাজ করার। প্রখ্যাত আলোকচিত্র শিল্পী শুভাশিস গুহ নিয়োগী মহাশয়ও সেই তালিকা থেকে বাদ যাননি। সুদূর বাংলা থেকে বেশ কয়েকবার ছুটে গিয়েছেন বেনারসে। তুলেছেন তিন হাজারেরও বেশি ছবি। সেসব ছবি আগেই প্রর্দশিত হয়েছে অরন্ধনে। প্রদর্শিত হয়েছে হিমালয়ের ছবিও।
শান্তিনিকেতন এখনও তাঁর কাছে স্বপ্নের ঘোরের মতো। সকালে উঠলেই এখনও সেই বিস্ময় : রবীন্দ্রনাথের তৈরি করা আশ্রমে তিনি থেকেছেন, পড়ার সুযোগ পেয়েছেন এ যেন বিশ্বাসই হয় না! এ এক অপার বিস্ময় ও পরম সৌভাগ্য তাঁর। শান্তিনিকেতন ছেড়ে আসার পর শান্তিনিকেতনের জন্য প্রেম আরও গভীর হয়েছে বলে মনে হয়। বারবার ছুটে যেতে ইচ্ছে করে এক অমোঘ টানে।
আশির দশকের শেষ দিকে ক্যামেরার অত প্রচলন ছিল না। আর বিশেষ করে তাঁর কাছে তো ছিলই না। তখন উপাচার্য ছিলেন শ্রদ্ধেয় নিমাই সাধন বসু। বহু গুণী শিল্পী ও খ্যাতনামা মানুষকে সামনে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল সে সময়। কিন্তু সেই মুহূর্তগুলি ক্যামেরাবন্দি করতে পারেননি তখন। আজ বত্রিশ বছর পর শান্তিনিকেতনের কলাভবন, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রামকিঙ্কর বেইজ-র ভাস্কর্য, ছাত্র-ছাত্রীদের শিল্প-কর্ম, সিংহ সদন, ইতিহাসের সাক্ষী সেই প্রাচীন ঘন্টা এবং এখানে ওখানে ঘুরে বেড়িয়ে পুরনোকে নতুন করে দেখে বিস্ময়ে অভিভূত হয়েছেন তিনি। অসীম এক ভালোলাগা অনুভব করেছেন। তাঁর সেই ভ্রমণের মোবাইলে তোলা কিছু ছবি তুলে দেওয়া হলো আপনাদের জন্য।
উত্তম মাহাত, সম্পাদক
সব ছবি অনবদ্য। ছবিগুলো কথা বলছে।
উত্তরমুছুনখুব ভালো লাগছে দেখে, যত দেখি Shantiniketan কে ততই অবাক হয়ে যাই।
উত্তরমুছুন