চতুর্থ বর্ষ ।। বিংশতি ওয়েব সংস্করণ ।। ১৪ মাঘ ১৪৩০ ।। ২৯ জানুয়ারি ২০২৪


কর্মের তুলনায় পুরস্কারের সংখ্যা বেশি বা বড় হয়ে গেলে দায় হয়ে ওঠে বহন করা। লজ্জানুভব হয়, পরবর্তী ক্ষেত্রে। অনুশোচনা তৈরি করে বৈকি? তারপরও এইসব নিয়ে একটা জটিল রাজনীতি ঘুরপাক খেতে থাকে সমস্ত সৃষ্টিশীল জগতে। সাহিত্য শিল্পের প্রতিটা আঙিনায় চলে গেরিলা যুদ্ধ। কে পাবে কে পাবে না এই নিয়ে নানা ফন্দি ফিকির।
        ২০২৪ এর বই মেলাতে আমার এক কবি বন্ধু ঠাট্টা করে বলে,"কি গো ক'টা পুরস্কার পেলে?"
------কে বললো তোমাকে? 
------বলবে কে? ফেসবুকে ছবি দেখলাম তো।
------ও সেইটা? সেটা তো আমার না।
------তাই?
------হ্যাঁ।
------না গো। ঠাট্টা করে বললাম। আমি জানি ওটা তোমার না। এখন সাতটা বই লিখে নয়টা পুরস্কার পাচ্ছে তো অনেকেই, তাই!
           পিছন থেকে একজন এসে হাত ধরে বলে,"তুমি উত্তম মানে কল্পোত্তম তাই না? 'অরন্ধন' করো?"
           ভ্যাবাচেকা খেয়ে উত্তর দিই-----হ্যাঁ। কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারি না, সে কে? লজ্জায় রাঙা হয়ে যায় মুখটা। ও চিনলো, আমিই চিনতে পারলাম না? লজ্জাজনক। কী ভাববে ও? ভুল ভাববে না তো?
           ভালোবেসে বই দিতে গেলেও কেউ কেউ নেয় না। বই তো অনেক ভারী! তাই বাঁচতেই হয়, কে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর কে নয়। সবাইকে ভালোবাসাও কি সম্ভব? সম্ভব সবার বই বয়ে নিয়ে বেড়ানো?
           কেউ কেউ চেয়ে নেয় আবার। বই ও ভালোবাসা। তার যে বড়ই প্রয়োজন। পড়ে দেখতেই হবে বালি সিমেন্ট মাখা হাত থেকে কিসব বেরিয়ে আসে বিশ্রামের সময়, কলমের কালি দিয়ে? 
           তুমি একটু টেবিলে বসো। একটা সিগারেট খেয়ে আসি।
------যদি কেউ আসে?
------কেউ আসবে না। আমাদের টেবিলে কেউ আসবে না। নিশ্চিত থাকো তুমি।
            তারপরেও আসেন একজন। বই কেনেন। তিনটি। খুচরো দিতে হয়।
------রশিদ দিতে পারব না দাদা। 
------ও থাক। রশিদ দিয়ে কী হবে?
            চলে যান ভদ্রলোক।
            আমার এক বন্ধুর বন্ধু প্রতিদিন এসে খানিকক্ষণ তাকিয়ে দেখে পাশের টেবিলের মেয়েটাকে। বলে না কিছুই। দেখার মধ্যেই সুখ খুঁজে পায় সে। খুঁজে পায় আনন্দ। তাই স্টল বন্ধ করার সময় প্রতিদিন ১৫ মিনিট তার জন্য বরাদ্দ। এও কী কম সময়? কম গুরুত্বপূর্ণ?
           বইমেলার এইসব কিছু কিছু দৃশ্য কাব্যিক ব্যঞ্জনায় ভরপুর হয়ে ওঠে মুহূর্তে। তখন আর দশক বিভাজন থাকে না। এক ছাদের তলায় চলে আসেন সকলেই। জড়াজড়ি করেন। এগুলোও কি পুরস্কার নয়?


উত্তম মাহাত, সম্পাদক 


______________________________________________
যাঁদের লেখায় সমৃদ্ধ হলো এই সংস্করণ
______________________________________________
ডরোথী দাশ বিশ্বাস / শুভাশীষ ভাদুড়ী / সন্দীপ মুখোপাধ্যায় / রামপ্রসাদ গাইন/  সুপ্রিয় দেওঘরিয়া / গৌতম কুমার গুপ্ত / নিমাই জানা / উৎপল চট্টোপাধ্যায় / সুমিত বেরা / গৌতম দত্ত / অনন্যা আচার্য 
_____________________________________________


অনিবার্যতা

ডরোথী দাশ বিশ্বাস

আমি জানি, আমি না ডাকলেও আসবে তুমি
ছত্রিশটা বছর তোমার পথ চেয়ে বসে আছি,
তোমার আসার পথে সহজ নুড়ি পাথর বিছিয়েছি
অ্যাসফল্ট দিয়েছি,
দু-পাশে লাগিয়েছি দৃষ্টিনন্দন ফুল-পাতাবাহার
বহুজনের পদদলিত সে পথ যখন ভেঙেছে
সততা, সরলতা ও সত্যকথনের মালা জপে
নতুন করে তা গড়ে নিয়েছি নিঃশব্দে।

তোমাকে পাবার জন্য আমি কখনোই প্রার্থনা করিনি ঈশ্বরের কাছে।
বরং দু'হাত পেতে একটা বড় "শূন্য" চেয়েছি।
বড় অভিমানী আমি।
শুধু একটা সুপ্ত বিশ্বাসে ভর করে 
শুধু এই পথ চাওয়া।

কত লোকে কাঠখড় পোড়ালো
কত কথার বারুদ ছড়ালো
কত আড় চোখে ঠেরে ঠেরে দেখলো আমাকে
তোমার আগমন আশঙ্কায় 
আগেই চর্ব্য-চোষ্য-লেহ্য-পেয়
খেলো পাত পেড়ে
তোমার ট্রেনের টিকিট হারিয়ে ফেললো
বাসের টিকিটও।

আমার রাস্তা না কি ভুলে ভরা

এতো কিছুর পর তবু তুমি আজ এলে,
থরথর করে কাঁপছি আমি
শীতে নয়, আনন্দে।
মনে হচ্ছে যে কোনো সময় মৃত্যু হতে পারে আমার।

ক্রমে শান্ত হল মন। 
এখন প্রতীক্ষা সোনার স্বপ্নভরা আগামীর ভোরের।








ওঁ গঙ্গা

শুভাশীষ ভাদুড়ী 

কাছে আসে,

মায়াবী কাকের মত ছায়া যার;
ঠোঁট রাখে নাভিতে আমার,
খোঁটে গতজন্ম ,ইহজন্ম, খোটে পরকাল,

শ্মশান লাগোয়া এই গঙ্গাঘাট ,
এই অচেনা সকাল,
ঢেউয়ের মাথায় দুলে, বুদবুদের গায়ে
নেচে ফিরে যায়,
কাদা মাটি জল মাখা পায়
যারা হাঁটে ব্যতিব্যস্ত পৃথিবীর দিকে,
তাদের পায়ের ছাপ ফিকে
হয়ে আসে রোদ্দুরের তেজে,
হঠাৎ ছলাত শব্দে পাপড়িখসা
 ভাঙা পইঠা ভেজে

ক্ষণিক  পাপের ভার 
শেষ হলে
অনন্ত পুণ্যের খোঁজে, 
ফাটা মালশা ডুব দেয় ,আর
তারপর,গঙ্গাগর্ভ ভরা অন্ধকার।









অবগাহন 

               সন্দীপ মুখোপাধ্যায়


নিঃশব্দ চারিদিক 
নীরব... নীরব !

ক্ষয়ে যাওয়া ...
নিজেকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে...
একটি বিন্দুতে আনা!

উহ্ !
যন্ত্রণা... যন্ত্রণা 

আলোর দিকে যেতে যেতে
এক নতুন পথের সন্ধান
আলোর দিকে যেতে যেতে
অবগাহন!
পুণ্য স্নান!

আমাকে জাগাও
জাগাও আমাকে
আমাকে ভাসাও
ভাসাও আমাকে!
রূপ থেকে রূপান্তরে
অরূপ সাগরে!








তারাদের গান

রামপ্রসাদ গাইন 

সেদিন মাতাল মন
কোন ঘরে ঢুকেছিলি তুই
সে কি আমারই ঘর
সুন্দর পরিপাটি মেঘেদের দেশ 
কোবাল্ট নীল রঙা পর্দার ভাঁজে ভাঁজে
কার ছবি এঁকেছে নিয়তি
টেবিলে সাজানো মদ 
রাম কমোডিটি, কার কাজ এটা 

তখনই মনে পড়ে
নিঃসঙ্গ তারাটির কথা
যার নাম কেউ দেয় নি কখনও 
চালছিদ্র পথে মাঝে মাঝে
সূর্য মনে হয়
এই ঘর এই বিছানায়
আমি থাকি,আর থাকে সে

পারো তো এখানেই এসো সহজিয়া
গাইবো রাতজাগা তারাদের গান।








সুপ্রিয় দেওঘরিয়ার কবিতা 

১.
চার

চায়ের দোকানের পোস্টারে চোখ পড়ল
"লটারি কেটে মাছ ধরুন
 এক ঘন্টায় চারশ টাকা"
 খানিক হেসে উঠলাম,
 এক ঘন্টা চারশ টাকা দিয়ে মাছ ধরবে?
 ছিপ ফেলবে- যদি মাছ ধরা না দেয়!
 দোকানীকে বললাম
"কেন চারশ টাকার মাছ তো দেদার,
 অত ঝুঁকির কি দরকার?"
 দোকানদার হেসে বলল
"টোপ দিয়ে চার ফেলে
 ছিপে গেঁথে ফেলার আনন্দটাই আলাদা,
 সে স্বাদ কী আর
 মাছের আড়তে আসে?"
 তখুনি দোকানের দেয়ালে আরেকটি
 পোস্টার নজরে পড়ল, তাতে লেখা -
"কাছের মানুষ চিনুন
  দাদাকে ভোট দিন!"




২.
 তারাদের খেলাঘরে

 অন্ধকারের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে দেখি
 তারাদের খেলাঘর,
 হারিয়ে যাওয়া মুহূর্তদল উঁকি দেয়
 অন্ধকারের ছায়ামূর্তি তারা,
 মুখোমুখি এসে দাঁড়ায়, প্রশ্ন করে।
 অন্ধকারেও চিনে নিতে পারি তাদের-
 আমাদের জন্মের আগে ও জন্মের পরের
 সেতু বন্ধন করে দিয়ে গেছে তারা
 যেন আকাশের বুকে লক্ষ সন্ধ্যা প্রদীপ।




৩.
সবার কাজ, সবার রাজ

আর কিছুতেই কিছু হবে না
মেরুদণ্ড বিকিয়ে গেছে,
ভুল-ঠিক বলে কিছু লাভ নেই
যা যাবার তা চলে গেছে!
বুকের পাটা চিতিয়ে নিয়ে
ঢেকুর তুলছি অম্বলের--
কালের বাসি আজকে তেতো
তা নিয়ে নেই কোনো হেরফের,
তবু বড় বড় সব লাইন দাগা
মোটা সোটা সব বিশ্লেষণ,
মুখ পুড়েছে সব রথীর
কোনায় বসে লাখো রাবন-
তাদের ভিড়েও কীসের খোঁজ?
গঙ্গা সিন্ধু নর্মদায়?
কানে কানে কাকে বলো
ক্ষোভের খবর চরম ঘৃণায়?
সুখেই থেকো সুখের দিনে
জয়ের বাদ্যে করো উল্লাস
হৃদয় খুলে যায় কি দেখা
ঠিক কতখানি উপহাস
আর কতটা আস্ফালনে
নিয়েছে নিয়ে উড়ন্ত নিশান?
দেখতে হবে দিন গুনে!

গণতন্ত্রের হে বীরগণ--
আজকে আবারো বলি :
গরীব দেশ বড়লোক দেশ
আমরা সদাই মেনে চলি!
যতই বলুন সব এক ও এক
আমরা কিন্তু দুইই জানি
আমরা শুধু দেখেই খুশি
এক দেশেতে অনেক 'মানি'!



৪.
না ফেরার কথা

হঠাৎ একটা পুরনো দিনের কথা মনে পড়লে
অন্য একটা জগতের বাসিন্দা মনে হয়
একটা না ফেরার দেশের কথা
তখনই বুকের ভেতরটা হু হু করে ওঠে
খুব ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই দিনগুলিতে
সেই চরিত্রদের ভিড়ে মিশে যেতে ইচ্ছে করে
যাদের অনেকে হারিয়ে গেছে এই পৃথিবী থেকে
চলে যাওয়া মানুষদের যদি ফিরিয়ে আনা যেত!
মনে হয় অন্ধকারে ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে
ডাক দিই, যদি একেকজন ছায়ামূর্তি হয়ে
ভেসে আসে, তাদের লক্ষ না বলা কথার
কলতান নিয়ে। কত ভালোবাসা রয়ে গেছে বাকি,
কত অভিমান রয়ে গেছে অপূর্ন,
কত আলিঙ্গন রয়ে গেছে অধরা।
হঠাৎ একেক দিন অতীতকে ধরে বেঁচে থাকি
এক না ফেরার দেশের একেকটা ঘটনা নিয়ে 
আমাদের জীবনের ঘটনার সব অদৃশ্য ছায়াছবি।








গৌতম কুমার গুপ্ত-র কবিতা 

১.
স্পর্শরাগ   


সব ঘুমের আদর টুকু নিয়ে নিলে
পড়ে থাকল কিয়দংশ অক্ষরের ধূলোবালি
একটি অনুচ্ছেদও রইল না অপঠিত
অনাদর লেগে রইল বিতৃষ্ণ চোখে

চুম্বনের সারাংশে একটি চিরকাল অাছে
পুরোনো বইয়ের বাদামী পাতায় 
সেই সাক্ষ্য মুদ্রিত আজও
স্পর্শে যে সুখজ্যোৎস্না আছে
আভালোকে মঞ্জুরিত শাখায় শাখায়

বিহঙ্গেরা ফিরে এলে খুঁজে নেবে
ডানায় গ্রথিত পরদেশ
খেচরের সীমানায় বাঁধা থাক 
নীলমাখা আদরের অবশেষ ছায়াটুকু




২.
 মহানগর 


একটা অবাধ্য চিৎকারের মধ্যে থেমে যাচ্ছে না আমার ক্রোধ।কথার সুউচ্চ আঁচে বেরোচ্ছে না বেঠিক। মুখ দিয়ে বেরোচ্ছে না নর্দমাহীন শ্লেষ। ঘৃণার না -অসত্য ক্লেশ।আমরণ যুঝে যাচ্ছি প্রহরে অদৃশ্য  জ্বালায়।


যে লোকটা খিস্তি দিয়ে অপমান করছে,যে লোকটা হাজার মিথ্যে কথা বলছে, মানুষগুলোকে দাঁড় করিয়ে প্রশ্নের মুখে ফেলছে, সুড়সুড়ি দিয়ে টেনে আনছে রাস্তায়, বলছে প্রত্যাশা আর প্রতিশ্রুতি।


যে লোকটা ভুল বলছে করা না করার ফিকির, নিজের কোলে ঝোল টেনে চলে যাচ্ছে সুব্যবস্থিত চেয়ারে, ঘুমোচ্ছে বাতানুকূল অন্ধকারে, বিশ্রাম নিচ্ছে অপসৃজনের বিলাসী জাজিমে।  


ক্রোধ জ্বলে যাচ্ছে মিছিলের মশালে।পদাতিকে কারা জুড়েছে কোরাস।পা চালিয়ে চলে যাচ্ছে
পায়ে পায়ে স্থাবর নদী আরণ্যক পেরিয়ে সুসৌধ
দুর্গের কাছে।পাদদেশে পড়ে আছে নষ্ট প্রভুর কবন্ধ।


অতঃপর সমূহ গীত ও শ্বেত পতাকার উপকূলে
আমাদের নাগরিক সুখশান্তির সুস্থিতি।





৩.
ঈশ্বরের ছায়া 
                                                        

প্রদীপ থেকে ছায়ার জন্ম হলে
আলোর ব্যাখ্যা অন্যরকম হয়
এ আলোর কাছে নতজানু 
স্বয়ং ঈশ্বর

আলোর নির্মাণে আত্মরতি
প্রস্তুতির উৎসর্গ সন্ধ্যা
হৃদয়বেত্তার আবেগে আনন্দ সমাগমে
ঈশ্বরের উদ্বোধন ঘরে ঘরে

যখন একটি প্রদীপ জ্বলে ওঠে 
আলোর ব্যাখ্যার অনুকল্পে
ঈশ্বরের ছায়ার জন্ম হয়







নিমাই জানার দুটি কবিতা

১.
পরাগত ব্রহ্মার নিষিদ্ধ ঢেউ ও ভগ্ন বারুদের ফরাস কাঠ

বিদূষকের মতোই । পরা এ নৌকার কাছেই ক্ষয়জাত জল রেখে যায় অদ্বৈত বর্ণের এ প্রদাহ । শরীরের ভগ্নাবশেষ দিয়ে কে কাকে দাহ করে মধ্যরাতের সম্ভবামি কর্পুরে ও তেলে
জনিতৃ ছায়া দাউ দাউ উড়ে যায় মহাঘোর ধুমে । যজ্ঞের পুরোহিত নেই। তুমি শুধু বিচ্ছিন্ন নদীর কথা ভাবো । নদীটি সুতোর মতো পাক খায় পলল ছেড়ে খলবল বারুদে বারুদে
রক্তের ও বিশুদ্ধ দোষ ও জৈব কথা আছে । রতি ও একটি ঈশ্বরীর সম্পৃক্ত শৃঙ্গারের অবদনিত সংজ্ঞা । অঘোষ জলের তলদেশ স্থির । সকলেই রুদ্র বিভীষিকা বিষয়ক ভীষণ কথা বলে বাদ্যের অগ্নি সংকোশে , প্রসারিত হাতে ঘৃতাহুতি ও পরাবাস্তব মাংস
কাগজের মতোই এ কথা ও যম ভারী ক্ষমার প্রবেশ । নিষ্ঠুর তলদেশে ঈশ্বরের চোখে লাল নিশাচর । নৌকাটি আত্মগোপন করলো।
অবশেষে বজ্রপাত নীল শব্দে ধাতব ব্রহ্মা ভাঙ্গে এই ছদ্মবেশ ।
বিমান নেমে আসে , তরঙ্গায়িত অপরাজিতার মহা হোমাগ্নি শব্দে পাতালে অবিনশ্বর কপিশ জলে , ধীবর মৃতদেহের মৃত খায় ।





২.
নিঃশব্দ শব্দের রাধিকা ও নীল অম্বিকার জনন উপাচার

শব্দ নেই , এই সংঘাতময় বিস্ফোরণ কেন্দ্রে । বিন্দু বিন্দু কুরুর সমাহারে সঞ্চিত এ সড়ক । কুরুক্ষেত্রের রাস্তায় দীর্ঘ পদতলের সঞ্চরণ । ধূলো ও উড়ে যায় মহাশূন্যের মতো। নীল তৃষ্ণার হরিণটি এ জন্মের ছাই রেখে যায় মহাপাত্রের নীল বোধিকায়
কপিলাটি ক্রমশ দূরবর্তী ও সুদৃশ্য হয়ে উঠছে
বিশ্বামিত্রই নীল জন্মমাসের মৃত্তিকা সমগ্র । কে কাকে দাহ শেখায় মৃৎশিল্পী ? তীব্র ঘ্রাণ শব্দ দিয়ে এ সেতুর নিচে এসো আমরণ সন্ধি পদের মাংসাশী স্তন ভর্তি দুগ্ধবতী ফুলের পরাগ সদৃশ্য চুম্বকীয় বিভা নিয়ে । খন্ডিত জিহ্বাটুকু নিষিদ্ধ ঋতু ।
অধাতব নরম প্রভু আসে কৈলাস থেকে । বরফের আদিম স্ফটিক তরঙ্গায়িত ক্যারাভানে । দ্রোণ এসো ষাষ্টাঙ্গ অনুভূতে
শক্ত আপেলের ন্যায় এ পৃথিবীর গলা । দাউ দাউ জ্বলে ওঠে নিজস্ব চন্দ্রের গুপ্ত এ পাহাড় । বৈশাখের জলপ্রপাত। সু মেদ
স্বর্ণালংকার ফেলেই এসো হে রাধিকা । বিরোজা ক্ষেত্রে নীলপরী সেজে, রুক্মিণী নয় । মদন রসে সিক্ত করো অম্বিকা পূজার উপাচার, দশ শব্দের মতো তপস্যাময় জঙ্ঘা
শিরা রক্তের গলাকাটা দৃশ্যে পরিশোধিত করবো ঈশ্বরের সংহিতা জননতন্ত্রের শীতল নিষ্ঠা ।
সাপের জিভে সঞ্চয় রেখেছি আমার আন্ত্রিক আত্মার ঔরস, শুক্র








উৎপল চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা 

১.
অনন্য নিষাদ 

এক্সিলেটারে হাত পড়তেই 
প্রাণের আলাপে অতীত আবহগুলো 
হয়ে উঠলো সঞ্চারী 
কিছু দূর আরও দূর 
সিগারেট, পেট্রোল 
বাঁক ঘুরতেই নিঃস্ব সরোবরটির একপাশে 
লিও-র মোনালিসা 
খিদের ঠোঁটে হালকা একটু হাসি 
আবার বাঁক 
গোশালার মোড়ে, ফ্লাইওভারে অজস্র 
ভাললাগা শব্দের মধুর আকুতি 
রেস্টুরেন্টে সেলফি, খাবার 
তন্দুরী আর মশলা চিকেন 
কখনো আবার অর্ডারে চানা আর 
বাটার পনির 
এরপর হাত বদল পথ বদল 
ভালোবাসার ছোঁয়ায় উষ্ণ বুক 
কখনো বা একান্ত চিবুক 
শরীর জুড়ে স্পর্শহীন হিন্দোল 
দীর্ঘ যাত্রায় মিশে যাওয়া পথ 
ঝোলানো সেতু পেরিয়ে ব্যস্ত জনপদ 
রাজার দরবার 
এভাবেই ওঠাপড়া ভালোবাসা 
এভাবেই আরবার চাওয়া পথ 
জাগে চোখ ...... জাগুক নিষাদ ॥



২.
আশীর্বাদ 

তোমাকে আগুন হতে দেখেছি 
অভিশাপ দি নি 
আমার সর্বস্ব পুড়ে কালো 
আমার মাংস হাড় 
চুয়ানো মজ্জার গতি 
ঢিল প্রপাত 
তোমাকে সংহারক হতে দেখেছি 
অভিশাপ দি নি 
এখন সকাল 
চাঁদ পুড়ে সারারাত অবিচ্ছিন্ন আলো 
আকাশে নক্ষত্র দিক 
তোমাকে নৃশংস হতে দেখেছি 
অভিশাপ দি নি 
এর পর আবার নতুন 
সজল মেঘ.......বৃষ্টি 
সবুজের সমারোহে নীল 
চারিদিকে নির্মাণ 
সমস্ত শোক হারিয়ে পিচ্ছিল চামড়া...সুখ 
তোমাকে স্রষ্টা হতে দেখেছি 
দুহাতের আশীর্বাদে কামনা করেছি 
তোমার শিশুত্ব......... তোমার অমরত্ব







সুমিত বেরা 

শালুক বিলাস
     
মন বলে এক ছুটে ছুঁয়ে আসি চল
মাঠ ভরা কচি ঘাস দিঘী ভরা জল।
বাঁধানো ঘাটের পাশে শালুক বিলাস,
আনমনে ভেসে থাকা গুটিকয় হাঁস।
যদি পারি ছুঁয়ে এসে মেঘেদের ঘর,
দুটি হাতে ছুঁয়ে যাব নদী বালুচর।
ডানা ভেজা পাখিদের কুসুমিত ওম
ছুঁয়ে দিলে গাছেদের সব মূলরোম,
একেএকে রূপ নেবে কতশত ফুল
পুটুসের নাকছাবি, দোপাটির দুল।
বকুলের বনমালা, চাঁপার নুপুর
কদমের বাজুমলে বাদলের সুর।
পায়ে পায়ে পার হয়ে ছায়া ঘেরা বন
জানি ঠিক খুঁজে পাব আলোর কাঁকন!
সাতরঙা রামধনু যদি খুঁজে পাই 
চুপিচুপি তোর হাতে তুলে দেব তাই!





হেমন্তের ছবি 
                            
১.
আযানের সুর সুরে সেজে ওঠে ভোর,
কেটে যায় পাখিদের ঘুম ঘুম ঘোর ।
মাঠে মাঠে বেড়ে ওঠা কচি কচি ঘাস
চেয়ে দেখে রাঙা হলো পুবের আকাশ। 


২.
সকালের সোনা ঝরা আলো মাখে ফুল,
বাসা ছেড়ে পথে নামে একলা বাউল।
মিঠে রোদ পিঠে নিয়ে হেঁটে চলে যায়,
একা মন তার কাছে ছুটে যেতে চায়।


৩.
গোধুলীর আলো মেখে রাঙা হয় মাটি,
বাঁশুরিয়া সুর তুলে ষোলো আনা খাঁটি ।
ফিরে আসে চাষীবউ পায়ে পায়ে হেঁটে
সারাদিন মাঠে মাঠে পাকা ধান কেটে ।


৪.
ধুলো পায়ে একে একে ফিরে এলে চাষী
থেমে যায় মরমীয়া রাখালের বাঁশি ।
দীপ গুলি জ্বলে ওঠে তুলসীর থানে ,
মুখরিত হয় মাটি রামায়নী গানে।


৫.
গুটি গুটি রাত নামে সন্ধ্যার শেষে
চুমু দেয় চাঁদ মামা চুপি চুপি এসে।
মিটি মিটি জ্বলে ওঠে জোনাকির আলো,
একে একে সব তারা বেসে যায় ভালো।


৬.
ধীরে ধীরে চারিধারে আঁধার ঘনায়,
একা চাঁদ জেগে রয় সাপের ফনায়।
গাছে গাছে টুপটাপ ঝরে পড়ে হিম,
মাঝ রাতে স্নান সারে অশত্থ- নিম!








সত‌্যেরে লহ সহজে

গৌতম দত্ত

বুদ্ধদেব বসু এক জায়গায় লিখেছেন-' শিল্পমাত্রই রচিত এবং সেই অর্থে কৃত্রিম '। আমি মনে করি, সংস্কৃত সাহিত‌্য থেকে শুরু ক'রে আমাদের আধুনিক বাংলা সাহিত‌্যে আজকের দিনে সেইসব লেখাই ক্লাসিকের মর্যাদা পায়, যেসব লেখায় মানুষ ও মানুষে-মানুষে অসাম‌্যের কথা উঠে এসেছে। এখনকার দিনে রাজনৈতিক দলেও তুমি সহজেই ভালো মানুষ খুঁজে পেতে পারো, অথচ সাহিত‌্যের ক্ষেত্রে  তা পাওয়া কঠিন। ভালো মানুষ মানে,নিজের পকেট থেকে কিছু না দিলেও একজন দুখী মানুষের দুঃখ-কষ্টটা অন্তত বোঝে।এরকম এক প্রতিকূল পরিস্হিতিতেও বাংলা ভাষা-সাহিত‌্যের সম্মান ও মর্যাদাকে কিন্তু ধ'রে রেখেছে এর প্রকৃত পাঠকরাই। এখনকার দিনের কবি-সাহিত‌্যিকদের বড়ো অংশকে আমি সেটুকু কৃতিত্ব দিতেও রাজি নই। কারণ, তাদের পাহাড়প্রমাণ মিথ‌্যাচার। আমার এরকমও মনে হয়, একজন অসাধু লেখকের চেয়ে একজন সাধু পাঠক  আজকের দিনে বাঙালি সমাজে  অনেক বেশি গ্রহণযোগ‌্য। তাছাড়া, এখন যা পরিবেশ তাতে সাহিত‌্যের প্রকৃত পাঠকরা পয়সার অভাবে বই কিনে প'ড়তে পারছে না। অথচ তথাকথিত কবিদের বইয়ের তাক দিব‌্যি বিনাপয়সায় ভ'রে উঠছে। গ্রাম ও শহরের সাধারণ লাইব্রেরি গুলোর এখন যে কি দুরবস্হা, সেদিকে আমাদের তাকানোর সময় নেই, অথচ বইমেলায় গিয়ে বই দেখার ভিড় তা প্রমাণ করে কি?









নতুনগ্রাম ও কয়েকটি কাঠের অপেক্ষা

অনন্যা আচার্য

দু একটি পেঁচা তীক্ষ্ণভাবে তাকিয়ে রয়েছে। যেন বলতে চাইছে অনেককিছু। এই চেয়ে থাকা দেখতেই নতুনগ্রামে যাওয়া। চাহনি যত নিখুঁত হবে তার দাম তত বেশি, অতএব চাহিদাও বেশি। রঙ যত উজ্জ্বল হবে আকর্ষণ হবে বেশি। শিল্প যেখানে জীবিকার মাধ্যম সেক্ষেত্রে শিল্পীকে মুনাফার দিকটিও মাথায় রাখতে হয়। নতুনগ্রামও এর ব্যতিক্রম নয়। পুতুলগ্রাম নামেও পরিচিত এই গ্রামের বিশেষত্ব কাঠের পেঁচা। পুঁজিবাদের প্রভাবকে এই গ্রামের মানুষ অস্বীকার করতে পারেনি। তাই শুধু পেঁচা নয় বর্তমানে কানের দুল সহ গলার হার, টেবিল-চেয়ার, ঘড়ি, ভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি পর্যন্ত নতুনগ্রামে সহজলভ্য। তবে সবেতেই কাঠের পেঁচার ছোঁয়া রয়েছে।


কাঠের শিল্প শুধু নয়, কাঠের পেঁচার মতই এই অঞ্চলের আন্তরিকতা সর্বজনবিদিত। তারা আপন করে নিতে জানে। শিল্পীরা যেমন রঙকে আপন করে নেয়, নতুনগ্রামের বিভিন্ন সূত্রধরেরা আপন করে নিতে জানে দূর শহর থেকে সেই গ্রামে পৌঁছান মানুষগুলোকে। কাঠের শিল্প নয়, মানুষের আন্তরিকতাকেও একটা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে এই অঞ্চলের মানুষ। তাদের প্রতিদিনের শিল্পকর্মের মাঝে অপরিচিত মানুষের উপস্থিতিকে তারা সানন্দেই স্বীকার করে। অপরিচিত সেই সকল ভাই বোনেদের কাছে শিল্পের প্রদর্শন শুধুমাত্র ব্যবসায়িক স্বার্থে নয়, শিল্পীর অহংকারী হাসিও আড়ালে খেলা করে।


রাস্তার ধারে জমে থাকা গাছের গুড়ি, কাঠ চেরাই-এর বিস্তর শব্দ, দূরে হিজল গাছের ওপর রোদের আস্তানা দেখতে দেখতেই শিল্প খুঁজতে এগিয়ে যাওয়া। হিজল গাছের নস্টালজিয়া বেশিক্ষণ ধ্যানে রাখা যায় না। চোখ যায় এক নিথর বৃদ্ধের দিকে। শীতের রোদের কোলে কয়েকটি কাঠের টুকরো নিয়ে খুঁড়ে চলেছেন অতীত। পূর্বের আলাপ মনে পড়ে যায়, চিনতে পেরে ছুটে যাই তাঁর কাছে। তিনি চিনতে না পারলেও বুঝতে পারেন আমার সাথে তাঁর আলাপ প্রথম নয়। শিল্পীর দৈন্যদশা আমাদের কাম্য না হলেও দেখতে হয়। জানতে পারি তাঁর অভাবের কথা। শীতবস্ত্রের অভাব, খাদ্যের অভাব আর অভাব দায়িত্বশীল সন্তানের। সন্তানেরা যে দেখে না তাদের বৃদ্ধ মা ও বাবাকে। তাই তারা অবলীলায় স্বীকার করে নিতে পারেন, আমাদের তো কেউ নেই। শুনে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকি, ভাবি যে আমরাই তো বয়ে নিয়ে চলেছি বোধশক্তি বিহীন এই সমাজকে। বেশি করে কাঠের রাজপুত্র, রাজকন্যা ও কাঠের পেঁচা কিনে ফিরে আসি। প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসি দেখা হবে। যে স্বপ্ন নিয়ে তিনি তৈরি করেছিলেন রাজপুত্র ও রাজকন্যা, তা আজ দেউলিয়া হয়েছে। শিল্পের রূপকথা আর শিল্পীর রূপকথা এক নয় তিনি বুঝিয়ে দিলেন আমাদের। রাজপুত্র ও রাজকন্যার সাথে বাড়ি নিয়ে এসেছি তাঁর এই বোধ অথবা শিক্ষা। এখান থেকে নেওয়া কাঠের পুতুলগুলো বহু মানুষের অন্দরমহলের সজ্জা বৃদ্ধি করবে। শিল্পীর মানসিক ও আর্থিক অভাব সেই সজ্জাকে ফিকে করবে না। এসব ভাবতে ভাবতেই তাঁর বাড়ির আশপাশের বাঁশবাগান ঘুরে দেখা আর গত পাঁচ বছরের পরিবর্তন নিয়ে আলাপ আলোচনা করতে থাকা। এবার তাঁর বাড়ি থেকে বেরনোর পালা। আবার সেই হিজল গাছ। একইভাবে গাছটি খেলা করছে রোদের সাথে। হয়তো বৃদ্ধের যন্ত্রণার চিহ্নও খেলা করছে হিজলের পাতায়। নস্টালজিয়া উধাও। দায়িত্ব-বোধগুলো কেমন যেন স্বার্থে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। কোনো সম্পর্কই আজ আর সৎ নয়। সততা শুধু গাছের ছায়ায়, শীতের রোদে আর গ্রীষ্মের হাওয়ায় আর শিল্পীর রঙে।


শিল্পকে খুব ঘনিষ্টভাবে দেখলে উপলব্ধি করা যায় শিল্পের গোপন কোটরে লুকিয়ে থাকে শিল্পীর চেতনা। শিল্পীর হাতও যে অপরূপ এক শিল্প। শিল্পের সাথে শিল্পীর এই হৃদ্যতার কাছে আমরা ঋণী। হিজলের ছায়া ও স্মৃতিকে পিছনে রেখে রোদের আমেজ নিতে নিতে আর পথের ধারে রৌদ্রে ছড়ানো অসম্পূর্ণ কাঠের পুতুলগুলোকে দেখতে দেখতেই পৌঁছে গেলাম শিল্পী সনৎ সূত্রধরের ঘরে। মুহুর্তের মধ্যেই বহুদিনের যোগাযোগহীন আলাপ ক্রমশ আন্তরিকতায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠল। নতুন ঘরে প্রাচীন চেতনায় শিল্পকর্মগুলো এদিক ওদিক ছড়িয়ে রয়েছে। তবে অযত্নে নয়। সংগ্রহ করলাম কাঠের দুর্গা, বেশ কয়েকটি পেঁচা, খানিকটা আন্তরিকতা ও বেশ কিছু ছবি। আমরা শুধুমাত্র কাঠের পুতুল নিতে এসেছি এমন নয়, আমরা যেন অতিথি। তাই পৌষের বেলায় এক বাটি পিঠে আমাদের দেওয়া হয়েছিল। সনৎবাবুর সাথে আমার দীর্ঘ আলাপ। আমার শহরের মেলায় বেশ কয়েকবার তাঁর সাথে দেখা হয়েছে। বহু আবদার তাঁর কাছে করেছি। তাঁর হাতের বেশ কিছু কাজ আমার বাড়িতে এখনও রাখা আছে। পর্যটন মেলা উঠে যাওয়ায় আমার শহরে তাঁর আর আসা হয় না। আমার শহরে অন্য মেলায় তাঁকে আসার কথা জানালে তিনি সরাসরি জানালেন, 'টাকা দিয়ে আমরা মেলায় দোকান দিই না।' শিল্পীর এই স্পর্ধাটুকু নিমেষেই কুড়িয়ে তুলে রাখলাম।


নতুনগ্রামের কাঠের পুতুলের পাশাপাশি তাদের ভালোবাসার রঙ বরাবর মুগ্ধ করে আমাকে। বিভিন্ন প্রান্তে তাদের শিল্পকর্ম যেমন ছড়িয়ে পড়ছে তেমনি আন্তরিকতা হারিয়ে যেতে বসা এই সমাজের ভিন্ন প্রান্তে তাদের হৃদ্যতার স্পর্শ লাগুক। ঠিক যে যত্নে কাঠেরা শিল্প হয়ে ওঠে সেই যত্নেই নিষ্ঠুর হৃদয়গুলিতে রঙ ও আন্তরিকতার ঢেউ আসুক। হিজলের ডালে এবার রোদের অভাব। বাঁশবন পার হয়েই সেই বৃদ্ধের ঘর। সন্তানের ফিরে আসার অপেক্ষায় বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার দিনযাপন। দিনের শেষে কাঠের পুতুলদের রোদ থেকে ঝুড়িতে ভরে রাখা এবং নতুন রোদের অপেক্ষা।


______________________________________________
আগের সংস্করণের পাঠ প্রতিক্রিয়া 
______________________________________________

১/ চমৎকার, ঋদ্ধ আয়োজন
অভিনন্দন ও শুভ কামনা নিরন্তর
ভালো থাকুন
                             ----------কবি হাবিবুর রহমান এনার 

২/ উত্তমদা, কবিতাগুলো খুব সুন্দর হয়েছে। তার চেয়েও বেশি সম্পাদকীয় কলমে আপনার লেখাটি। কারণ বর্তমান সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সচেতনতার বার্তা আপনার এই লেখা। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন ।
                                        ---------রূপলাল কৈবর্ত 

৩/ সত্যিই অবাক হলাম। এ এক প্রাপ্তি।
                                    ------------অনন্যা আচার্য

৪/ খুব ভালো কাজ। তুমি অনেকবার বলেছো লেখা দিতে।পারিনি।  দু একদিনের মধ্যে একটি কবিতা পাঠাচ্ছি। ভালো থেকো।
                                 -----------কবি সন্দীপ মুখার্জি

৫/ ছবিগুলো বেশ ভালো লাগল। পত্রিকাটিও নিয়মিত হচ্ছে। চলতে থাকুক...
                              -----------কবি সোমেন মুখোপাধ্যায় 

৬/ স্থির চিত্র গুলো অসাধারণ....! আপনার সম্পাদকীয় থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত এতটাই ভাল লাগা জড়িয়ে আছে, ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়....!অক্ষয় হোক।প্রণাম। ধন্যবাদ।
                                        -----------কবি তনয় চক্রবর্তী 

৭/ প্রতিটি লেখাই ভীষণ ভালো 

দেবযানী ঘোষালের দুঃস্বপ্ন-র প্রথম চার লাইন গানের লিরিক
                                            ----------কবি শর্মিষ্ঠা ঘোষ 


______________________________________________

                                    আমাদের বই













সম্পাদক : উত্তম মাহাত
সহায়তা : অনিকেতের বন্ধুরা
অলঙ্করণ : বিকাশ ভট্টাচার্যের পেন্টিং, আন্তর্জাল
যোগাযোগ : হোয়াটসঅ্যাপ - ৯৯৩২৫০৫৭৮০
ইমেইল - uttamklp@gmail.com





 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র ।। সন্তোষ রাজগড়িয়া

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র শিল্প ।। মুকেশ কুমার মাহাত

পঞ্চম বর্ষ ।। তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ ।। ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ০২ অক্টোবর ২০২৪