চতুর্থ বর্ষ ।। প্রথম ওয়েব সংস্করণ ।। ১০ বৈশাখ ১৪৩০ ।। ২৪ এপ্রিল ২০২৩




দেখতে দেখতে তৃতীয় বর্ষ পার হয়ে চতুর্থ বর্ষে পা রাখলো আমাদের প্রিয় অরন্ধন ওয়েব পত্রিকা। ভালো মন্দ যাই হোক না কেন, সকলকে সঙ্গে নিয়ে সকলের ভালোবাসা নিয়ে এইভাবে একটু একটু করে এতটা পথ এগিয়ে আসার জন্য যে আন্তরিক ভালোবাসা ও সহায়তা পাওয়ার প্রয়োজন ছিল পাঠক ও লেখক লেখিকা বা কবি শিল্পীদের কাছ থেকে, তার এক চুলও খামতি ছিল না কোথাও। আগামীর দিকে হেঁটে যাওয়ার জন্যও এই ভালোবাসা ও সহায়তা অত্যন্ত জরুরি। সকলের ভালোবাসা ও সহায়তা ব্যতিত একটা লিটলম্যাগ, সে অনলাইন বা অফলাইন যাই হোক না কেন, চলতে পারে না। তাই সকলের জন্য শুভ কামনা জানিয়ে ও সকলের কাছ থেকেই শুভ কামনা প্রার্থনা করে সামনের দিকে হেঁটে যাওয়া আমাদের। সবাই ভালো থাকুন। হাতে হাত রেখে এগিয়ে চলুন সৃজনশীলতার দিকে। সুন্দরের দিকে।


উত্তম মাহাত, সম্পাদক 


______________________________________________
যাঁদের লেখায় সমৃদ্ধ হলো এই সংস্করণ
______________________________________________
দুর্গা দত্ত / তাপস ভট্টাচার্য / দেবাশিস সাহা / শংকর ব্রহ্ম / বিশ্বম্ভর নারায়ণ দেব / হামিদুল ইসলাম / সুশান্ত সেন / তপন পাত্র 
______________________________________________


দুর্গা দত্তের কবিতা 

আখেটিক পর্ব : সাত খণ্ড 


আখেটিক  :  এক

শিকারপর্বের শেষ ।  
স্বর্ণগোধিকার ছাল ছিলায় বেঁধেছি যত্ন করে । 
আমানির ঢোঁক নিয়ে এই আমার শিক্ষা দীক্ষা 
মন্ত্রগুপ্তি ক্রিয়াকর্ম বৃত্ত উদ্ভাবন --

আমাদের জ্যা থেকে সুকৌশলে হাড় মাস নিয়ে গেছে 
প্রচলিত যোগ্য কোনো জুতসই ধ্রুপদী শিকারী--

আমাদের হাড়ে দুব্বো গজিয়েছে বছর বছর

স্বর্ণগোধিকার কোনো জন্ম ইতিহাস 
কোনো পরম্পরা আমরা জানি না

এই নে ফুল্লরা তোর হাড় জ্বালিয়ে কেউ তোকে 
বিরক্ত করবে না এই দুপুর বেলায় --

আমানির গান তুই তুলে রাখ গর্তে গর্তে , শিকেয় সাজিয়ে।
এই নে রে ছাল তুই ইষ্ট গোধিকার, নে সোনালি চামড়ার --

যা ইচ্ছে তাই কর তুই, 
প্রাণেতে  যা চায় তোর, যেমনটি চায় --
সাধ মিটিয়ে দেখ সব ছিঁড়ে খুঁড়ে শৌখিন বাগান


৩ 
আমাদের গাথা কোনো মঙ্গল আখ্যানে লেখা নেই।
ফুল্লরা রে, আমানির চেনা স্বাদে জন্মান্তরে কাঁথা মুড়ি দে --

স্বর্ণগোধিকার ছাল ছিলায় ঝুলিয়ে নিয়ে  
আমাকেও ফিরে আসতে হবে --

যদ্দিন না সেই গোধিকার অন্তঃসার , কানাকড়ি 
তোর দাওয়া-তে  নিয়ে আসতে পারি ! 




আখেটিক  :  দুই


এই নে ফুল্লরা তুই 
ঘুমোনোর আগে আর ঘুমোনোর পরে তোর
স্বপ্নে পাওয়া শালবীজ,  ধুনুচির ঘ্রাণ… 

এই নে ফুল্লরা তোর ভোর রাতে স্বপ্নে দেখা 
অলীক তৈজস … 

এই নে ফুল্লরা তোর জলহীন সারাটা দুপুর… 

মাংসপোড়ার গন্ধে বিকেলের আলো নিয়ে 
লবণ সন্ধান আর উৎসব যাপন — 

সন্ধ্যাক্ষরে ফুল্লরা রে
এই হলো আমাদের দিনাতিপাতের ইতিহাস ...    
    








ঘাটের পাথর

                         তাপস ভট্টাচার্য

মানুষের কথা সেভাবে কে ভাবে 
মুখেই  দরদ
উৎসবের নামে চারিপাশে যথেচ্ছাচার শব্দ দূষণ 
  
নিরীহ মানুষ বয়স্ক মানুষ  রোগীরা অসহায়
বাহুবলি  নিষিদ্ধ ডিজের বাজনায়
   
একি উন্মত্ত আধুনিকতার অহংকার
নাকি চরম অশিক্ষা
    
স্বার্থপর আত্মমর্যাদাহীন
কোলাহল মুখর এই প্রজন্ম
ধীরে ধীরে আজ ঘাটের পাথর।










দেবাশিস সাহা-র তিনটি কবিতা


১.
অনন্ত দুই পাথর 


যে নামে ডাকলে ফিরে তাকায় 
জল 
গহীন মাছ 
সাদা এবং কালো বিভ্রম 
টুকিটাকি এমন আরও অনেক কিছু 
তেমনই একটি ভেজা কন্ঠস্বর 
                       বিরল মেঘসরণী 
এইসব ঝাঁঝালো বাতাসে 
পা ফেলে হাঁটছে
 
হাঁটার ভেতর 
নিশ্চুপ 
দু'দিকে প্রবাহিত অনন্ত দুই পাথর




২.
অল্প আলোর হরিণ
 

ঝাঁঝালো পাটিগণিত কি রামপ্রসাদী হাওয়া 
কারোরই মনে নেই 
তুই আমার অল্প আলোর হরিণ 
          মেঘে ঢাকা লক্ষ্মীছাড়া ফিনিক্স 
কোটি জন্ম ফুরিয়ে  
তুই আমার সন্তর্পণ পা ফেলা 

তোরই আলোয় 
গর্ভসঞ্চার ফের 



৩.
ক্যাবলা 


বেলা যায়...
একটা লাইনও তোমাকে পড়া হল না।
অথবা না--পড়াও ভীষণ পড়া এক জেনে
শিশুর মতো তোমাকেই ধরে আছি 
নিঃস্ব মুঠোয়।

ঝড় তোমার সঙ্গে যায়
হাত ধরে নুড়ি পাথর
ক্যাবলা আমি কেবলই কুড়োই
কুড়নো হল না
এখনো যেটুকু জগতরেণু









আগামী প্রজন্ম 

 শংকর ব্রহ্ম 


                                 কোথায় রেখেছ সেই গোপন ভান্ডার,
কোথায় লুকানো আছে ম্যাজিক লন্ঠন?
কোন সে চোখের মায়া টানে, সংসারের গহিন আঁধারে
হারিয়ে যেতে যেতে অকস্মাৎ জেগে ওঠা নির্জন প্রান্তরে?

কার চোখে খুঁজে ফেরো জীবনের নব ধারাপাত?
কার কাছে জমা রেখে চলে যাবে পূর্ব পুরুষের যত ঋণ?
একবার ভেবে দেখো শুধু,
আগামী প্রজন্ম তুমি এ কোন পৃথিবীতে রেখে যেতে চাও? 








নতুন বছর 

বিশ্বম্ভর নারায়ণ দেব 


গরম রোদ্দুর গায়ে মেখে 
হাঁসেদের  দল নিঝুম ঘুম যায় 
শুকনো পুকুরের পাশে গিমেশাক বিছানো শয্যায় ।

বেলফুলের গন্ধে হয়ে আসে ভোর
আমিও রয়ে গেছি বিভোর
হয়ে গাছ-কাটা মানুষের সাথে ঝালেঝোলে
আত্মঘাতী বাঙ্গালীর গড়পড়তার দলে। 

উঠোনে কিচিরমিচির কিছু আজ বলছে শালিখে 
বাংলা কবিতা দুটো শাকভাত দিক বাঙ্গালীকে।








                                 
           হামিদুল ইসলামের কবিতা 

১.                              
মিছিল

ঝরাপাতা দিন
বৃষ্টি টুপ টুপ
ভিজে যাচ্ছে রঙ মহল
তোমার ভালোবাসা আমার বুকের ভেতর সারারাত সারাদিন       ।।


করতোয়া পেলবতা
ভাঙছে নদী হৃদয় বরাবর
ভাঙার গান তোমার ঠোঁটে
তোমার নাভিপদ্মে আঁকি আমার নিত্য কবিতার ভূবন        ।।


তুমি অপ্সরী
তুমি মায়া
তুমি প্রতিদিন ভাসো আমার কথাঘরে
তোমার খোঁপায় রোজ রোজ গুঁজে রাখি রোদের শাওণ      ।।


কারা আসে
কারা যায়
পড়ে থাকে স্মৃতি, কালবেলা
আমরা ইতিহাস হয়ে উঠি, কখনো সংগ্রামের জ্বলন্ত মিছিল      ।।


                                 
২.
ব্যবধান

এসো রাত জাগি
সারারাত
গায়ে মাখি রাতের সুবাস
শাণ দেয়া কথাগুলো জেগে উঠুক শব্দের বালুচরে        ।।


তুমি আমি শব্দ বারুদ
তুমি আমি বুক ফাটা রক্ত
তুমি আমি আগুন, তপ্ত আগ্নেয়গিরি
তুমি আমি বিপ্লব, তুমি আমি কথার আগুন     ।।


জীবন মানে লড়াই
জীবন মানে যুদ্ধ
জীবন মানে মারণ যুদ্ধ প্রতিদিন
তুমি আমি কেবল প্রতিদিন যুদ্ধের অমোঘ কুরুক্ষেত্র         ।।


আজও শোষক
আজও শোষিত
আজও যুদ্ধ, আজও বৈষম্য আসমান জমিন
এসো আমরা সবাই যুদ্ধ করেই ভাঙি এই ব্যবধান        ।।


                                   
৩.
বসন্ত

আজ বসন্ত
হাতে রাখি হাত
ফুলে ফুলে সাজাই নৈবেদ্য
ফুলে ফুলে সাজাই বসন্তের ভোরাই উৎসব      ।।


পাখিদের গানে আজ মুখরিত আকাশ
রঙে রঙে সেজেছে ভূবন
এসো রঙ মেখে সঙ সাজি
এ জীবন হোক আলোয় আলোময়       ।।


তুমি আমি বসন্ত হই
তুমি আমি হই বসন্তের দোলা
বসন্ত আমাদের বুকের ভেতর
বসন্ত মানে আমাদের প্রিয় প্রিয় গান গাওয়া      ।।

                 






সুশান্ত সেনের কবিতা 

১. 
মেয়েটি

কাল রাতে মাতাল স্বামীটি পিটিয়েছিল
তবু আজ এই অবুঝ সকালে 
মেয়েটি তারই জন্য
ভাত রান্না করতে বসেছে।
সোঁদা ঘরের সামনে
বিড়াল ছানা'টি বসে আছে।



২. 
কঙ্কাল

একটি লোক সিড়ি বেয়ে উঠে যাচ্ছে
আমি পেছনে
শেষ ধাপে উঠে সে ঘাড় ফিরিয়ে
আমায় মৃত চোখ দিয়ে দেখলো।
দূরদর্শনের ছায়া মনে এল।
কোনদিন আর সিগারেট খাবো না।



৩. 
রাত্রি

রাত্রি কি সকাল কে ভালোবাসে
সকাল দুপুর বা মধ্যাহ্ন'কে
অথবা সাঁঝবেলাকে ! 
এত ভালোবাসায় 
ভালোবাসা চটকে গিয়ে এখন
শ্মশানে বাংলা মদ নিয়ে বসেছে।
কে যেন সাদা গুঁড়ো'ও দিয়ে যাবে বলেছে।



৪. 
কথা

তোমার কথায় সোনালী বিষ
ভিমরুলের মতন হুল
বলার পরে কাঁপলো পাড়া
প্রতিস্তরে হুলুস্থুল।
পুরুষ তাই কলকে পেলে
মাতলো কখন গড়িয়াহাট
নারী যদি বেহাগে গায়
লাগবে ছি ছি কি বিভ্রাট !






মানবাজারের আবহমান সাহিত্য সাধনা

                  তপন পাত্র


কর্ম মাত্রেরই সূচনায় একটি গৌরচন্দ্রিকা প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এই সুশীতল চন্দ্রকিরণ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অন্ধকার দূরীকরণে অনেকটাই সহায়ক হয়ে ওঠে যে , তাই...। এখন পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার মানবাজারের আবহমান সাহিত্য সৃজন কথা রচনা করতে গিয়ে প্রথমেই স্বীকার করে নিতে হয় যে, এই রচনা নিতান্তই সংক্ষিপ্ত, স্বাভাবিকভাবেই অসম্পূর্ণ। আর দ্বিতীয় স্বীকারোক্তিটি হলো, আজ থেকে ৮ বছর আগে ২০১৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মানবাজার থেকে প্রকাশিত সর্বকালের সকল কবির কবিতায় সমৃদ্ধ কবিতা সংকলনের ভূমিকাটি এই রচনার সর্বাপেক্ষা সহযোগী উপাদান। ওই সংকলনটিতে জন্মসালের দিক থেকে ১৮৫৭ সাল থেকে ২০০০ সালের মোট ৯৬ জন কবির কবিতা সংকলিত হয়েছে।
                           বাংলা সাহিত্যের বিকাশ সাধন মূলত কলকাতা কেন্দ্রিক, সে কবিতাই হোক আর কথাসাহিত্যই হোক। আজ থেকে প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে বিংশ শতাব্দীর ৭০ এর দশকে তা মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, পুরুলিয়া সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল। তাই সত্তর দশকের অন্যতম অগ্রগণ্য কবি সিউড়ির বাসিন্দা একরাম আলি এই মানবাজার থেকেই প্রকাশিত "জন্মভূমি" পত্রিকায় মুদ্রিত তাঁর একটি রচনায় বাংলার কবিতা ও সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রে সত্তরের দশককে 'মুক্তির দশক' বলে উল্লেখ করেছেন।
                        মুক্তির দশক কেন (?) -- সে কথা স্পষ্ট করতে হলে প্রথমে স্মরণ করি বিনয় মজুমদারের একটি কথা, "কবিতা শেষ পর্যন্ত জননীরাই লেখেন"। অক্টাভিও পাজ চেয়েছিলেন মুক্তি।"সত্তার জন্যে মুক্তি"প্রবন্ধে তিনি বলেছেন, "যদি আত্মরক্ষা করতে হয় তবে সময় আমাদের যে প্রশ্ন করে তার উত্তর আমরা দিতে বাধ্য।"অক্টাভিও পাজ লজানো ছিলেন সুবিখ্যাত মেক্সিকান কবি এবং কূটনীতিবিদ। তাঁর সৃষ্টির জন্য, তিনি ১৯৭৭ সালে জেরুজালেম পুরস্কার, ১৯৮১ সালে মিগুয়েল ডি সার্ভান্তেস পুরস্কার, ১৯৮২সালে সাহিত্যের জন্য নিউস্ট্যাড্ আন্তর্জাতিক পুরস্কার এবং ১৯৯০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এই মুহূর্তে বীর সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দেরও একটি বাণী স্মৃতিতে ভেসে উঠছে, তিনি বলেছিলেন "ব্যক্তি যত মহানই হোন না কেন, তিনি যদি নিজের যুগের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে না পারেন, তবে সেখানেই তাঁর সমস্ত মহত্ত নষ্ট হইয়া যায়।"অতএব দেওয়া ও নেওয়া --সব ক্ষেত্রেই সমসাময়িকতার একটা ভূমিকা রয়েছে।
                         ৭০ এর দশকে যখন বাংলা সাহিত্যের দুটি বলিষ্ঠ ধারা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে, ক্ষমতা স্থিমিত হয়ে আসছে তখন ধীরে ধীরে মফস্বল সাহিত্যচর্চা কলকাতা কেন্দ্রিক সাহিত্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছে,মা শুরু হয়েছিল কিছুকাল আগেই। এই সময়ের আগের দু'টি ধারা হল "কৃত্তিবাস"কেন্দ্রিক পঞ্চাশের দশকের লেখককুল এবং হাংরি জেনারেশন।
এই দু'টি ধারার মাঝখানে প্রায় নীরবে এবং নিঃশব্দে, নিঃসঙ্গভাবে পঞ্চাশের দশক পেরিয়ে ষাটের দশকের কয়েক জন কবি এগিয়ে এলেন। এঁরা হলেন ভাস্কর চক্রবর্তী, দেবারতি মিত্র, শামসুর আনোয়ার, মানিক চক্রবর্তী প্রমুখ। এবং এক্ষেত্রে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে মানবাজারের কবি অমরশঙ্কর দত্তের কথা। জন্ম ১৯৩৮ সালে, যথাযথভাবে কবিতা রচনার শুরু ১৯৫৮ তে।
                     বাংলা সাহিত্য রচনার ধারার মূল স্রোতের সঙ্গে যখন মফস্বল জেলা ও গ্রাম-গঞ্জ জড়িয়ে যাচ্ছে, সে সময় সেই মূল্যবান মালার বন্ধনে মানবাজারও জড়িয়ে গেল এক কবির রচনা ও প্রকাশের মধ্যে দিয়ে। এবং তার আগে এ দেশের স্বাধীনতার কয়েক বছর আগে থেকেই মানবাজারে লেখালেখি ও পত্র-পত্রিকা প্রকাশ শুরু হয়।
                        যে সময়টাকে বাংলা সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে "মুক্তির দশক" বলা হচ্ছে, সেই দশকের প্রায় একশ বছর আগে থেকেই ইতস্তত প্রক্ষিপ্ত শাল-পলাশের মতো শুধু মানবাজার নয়, সারা পুরুলিয়া জেলা জুড়েই সাহিত্যচর্চা চলে আসছে। মানবাজার- ১ ব্লকের কামতা-জাঙ্গীদিরি অঞ্চলের পলাশডি গ্রামের অক্ষু কর্মকার(১৮৫৭-১৯৫৭) এখানকার প্রাচীনতম কবি। সম্ভবত তিনি তৎকালীন মানভূম তথা অধুনা পুরুলিয়া জেলার দ্বিতীয় প্রবীণতম কবি। মানভূম জেলার তাঁর আগের কবি হিসাবে আমরা পাই গড়-জয়পুরের ভিক্ষাম্বর নারায়ণ সিং দেও(১৮৪০-১৯২১)এর নাম। এই ব্লকের চাঁদড়া-পায়রাচালী অঞ্চলের পোলমী গ্রামের জগৎ "কবিরাজ"(১৮৮৯-১৯৫৭) ঝুমুর রচয়িতা হিসাবে বৈষ্ণব কবিদের পাশাপাশি অবস্থানের সুযোগ্য ব্যক্তিত্ব। পেশায় তিনি কবিরাজ ছিলেন। কিন্তু কাব্যচর্চার প্রতি সুগভীর আনুগত্য ও ভালোবাসার কারণে কবিরাজি ছেড়ে দিয়ে ঝুমুর রচনায় ঝুঁকে পড়েন। কবি হিসেবেও তিনি শ্রেষ্ঠ --- এই পরিচয়েই জনসমাজে পরিচিত হয়ে ওঠেন। তাঁর অসংখ্য ঝুমুর ছন্দ সুষমায়, অলংকার সজ্জায় ও শব্দের নিপুণ ব্যবহারে প্রাঞ্জল।
                           বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিক থেকেই যাঁরা কবিতা রচনা ও চর্চা করেছেন, তাঁরা হলেন অসিত রঞ্জন দে (১৮৯৮),ফকির পাত্র (১৯০৮-১৯৬৫), অমরনাথ চৌধুরী (১৯১৩-১৯৮০)প্রমুখ।
                            এরপর ১৯৪৭ সালে মানবাজার গন্ধেশ্বরী ক্লাবের সঙ্গে টাউন ক্লাবের ফুটবল প্রতিযোগিতা হয়, প্রতিযোগিতায় হারজিত নিয়ে কিংকর দত্ত একটি কবিতা লেখেন; লিখে বর্তমান মানবাজারের চৌমাথায় (মানবাজার চক) চিটিয়ে দেন।
তিন বছর পর ১৯৫০ সালে শ্যামল কুমার দে "উদয় ভানু" নামে একটি দেওয়াল পত্রিকার শুরু করেন। এই দেওয়াল পত্রিকার ঠিক আগের দু' এক বছর মঙ্গল শেখ "বেঁড়ে কলম" শিরোনামে কিছু রচনা দেওয়ালে চিটিয়ে দিতেন। প্রথম দিকে "উদয় ভানু"তে নিয়মিত কবিতা লিখতেন কার্তিক দাস (১৯১১ - ১৯৫৬) ও কালী দত্ত। এই কালী দত্ত যে প্রকৃতপক্ষে কে তা আজ আর সুস্পষ্ট নয়। এখানকার খুবই বয়স্ক মানুষদের সাথে কথা বলে তিনি-চারজন কালি দত্তের নাম পাওয়া গেছে; ঠিক কোন্ কালী দত্ত লেখারেখি করতেন, সে কথা কেউ স্পষ্ট করে বলতে পারেন নি।
                           মানবাজারের বর্তমান রাধামাধব বিদ্যায়তন এম.ই. স্কুল থেকে আর. এম.আই. নামে হাইস্কুলের রূপ পায় ১৯৪১ সালে। ১৯৪৭ সালে "প্রকাশ" নামে বিদ্যালয়ের বাৎসরিক পত্রিকার প্রথম প্রকাশ ঘটে। সম্পাদক ছিলেন শ্রী কৃত্তিবাস নাথ, সহ-সম্পাদক ছিলেন --শ্রী উমারশঙ্কর মুখোপাধ্যায়। প্রথম কয়েকটি সংখ্যার মূল্য ছিল আট আনা। শিক্ষক বিজয় চন্দ্র পতি কর্তৃক পুরুলিয়া অন্নপূর্ণা প্রেস থেকে মুদ্রিত।
‌ ১৯ ৭১ সালে পয়লা নভেম্বর পুরুলিয়া জেলার বঙ্গভূক্তির পঞ্চদশতম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অন্যতম ভাষা সেনানী শ্যামল কুমার দে পাক্ষিক সংবাদপত্র হিসাবে "কংসাবতী" প্রকাশ করতে শুরু করেন। মানবাজারের সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাসে এটি একটি মাইলস্টোন। মোড় বদলও বলা যেতে পারে। এই পত্রিকাটির প্রকাশকাল থেকে মানবাজারের সাহিত্যচর্চার বিস্তার ও আবর্তন বিবর্তন এই পত্রিকাটিকে কেন্দ্র করেই। ১৯৭৯ সালে মুদ্রিত আকারে প্রথম সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করেন মানবাজার রাধা মাধব বিদ্যায়তনের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক শ্রী চিত্তরঞ্জন রায়। ১/৮ সাইজের এক ফর্মার এই কাগজে মোট চারজন কবির কবিতা ছাপা হয়েছিল। বাকি লেখাগুলি ছিল গদ্য। এরপর নিয়মিত ও অনিয়তমিতভাবে প্রকাশিত হয়েছে ---
             (১)অনুষ্টুপ , সম্পাদক -চিত্ত রায়
              (২) অভিব্যক্তি, সম্পাদক -জগন্নাথ ব্যানার্জী  
              (৩) আতস কাঁচ , সম্পাদক-অচিন দত্ত
               (৪)আবর্তিতা, সম্পাদক -অনুরূপা সেন
                (৫) এপিটাফ, সম্পাদক -রঞ্জিত চৌধুরী 
                (৬)কংসাবতী, সম্পাদক শ্যামল কুমার দে 
                 (৭)কথাভূমি,সম্পাদক -গৌতম দত্ত 
                 (৮)কালবেলা , সম্পাদক- মুচিরাম দাস মহন্ত
                 (৯)খেয়ালখুশি, সম্পাদক-দয়াময় মাহান্তী
                 (১০)ঘাসফুল, সম্পাদক -সন্দীপ সেন
                 (১১) ছায়াতরু, সম্পাদক- রাণা প্রামাণিক 
                 (১২)জঙ্গলমহল -সম্পাদক অমরশঙ্কর দত্ত ও সমীর দত্ত
                  (১৩)জন্মভূমি, সম্পাদক -তপন পাত্র 
                   (১৪)তারারা, সম্পাদক আশুতোষ বিশ্বাস
                  (১৫)দিশারী, সম্পাদক- তাপস দাস
                (১৬) পরিষদ, সম্পাদক -মানিকলাল বন্দোপাধ্যায়, 
              (১৭)প্রভাত রশ্মি, সম্পাদক- সিরাজ চৌধুরী
              (১৮)প্রিয়ংবদা, সম্পাদক -অসীম কাজল মাহান্তী
              (১৯)বিহঙ্গম, সম্পাদক- বাসন্তী হালদার 
               (২০)বোধি, সম্পাদক- চন্ডীদাস মুখোপাধ্যায়, গৌতম দত্ত। 
            (২১)মল্লিকা মালতী, সম্পাদক- দিলীপ পাত্র 
             (২২)মধুবন, সম্পাদক -অতনু চক্রবর্তী 
              (২৩) মশাল, সম্পাদক সমীর কুমার সেন 
              (২৪)রক্তপলাশ, সম্পাদক- চিরঞ্জীব কর্মকার
              (২৫)রঙিন রাঢ়, সম্পাদনা-মানবাজার-১ পঞ্চায়েত সমিতি
              (২৬)লালপলাশ, সম্পাদক -অমিতাভ মিশ্র
            (২৭)শতাব্দী, সম্পাদক রামকৃষ্ণ ব্যানার্জি 
           (২৮)শবরী, সম্পাদক রামকৃষ্ণ ব্যানার্জি 
        (২৯) সবুজ পাতা, সম্পাদক বাদল চন্দ্র গাঙ্গুলী 
         (৩০)সূর্যেন্দু সঙ্গম, সম্পাদক আকুল চন্দ্র দত্ত 
           (৩১)স্তোত্র, সম্পাদক অমরশঙ্কর দত্ত।
           (৩২)আতস কাঁচ, সম্পাদক অচিন দত্ত 
           (৩৩)খেয়াল খুশি, সম্পাদক দয়াময় মহান্তি
 
                বর্তমানে সাপ্তাহিক সংবাদপত্র হিসাবে "আতস কাঁচ" প্রকাশিত হচ্ছে। সাহিত্য পত্রিকা বলতে মাঝে মাঝে প্রকাশিত হয় "দিশারী", "তারারা"ও "জন্মভূমি"।
                       মানবাজার এলাকায় জন্মগ্রহণ করে যাঁরা কবিতা ও গদ্য, কথা সাহিত্য রচনা করেছেন ও করছেন তাঁদের মধ্যে অমরশঙ্ককর দত্ত বিংশ শতাব্দীর ৭০ এর দশকের বলিষ্ঠ কবি যদিও তার কবিতার রচনার শুরু ষাটের দশকে। মানবাজারে বসেই লিখেছেন কৃত্তিবাস, যুগান্তর, আজকাল, সানন্দা, গণশক্তি, নবকল্লোল ইত্যাদি পত্রিকায়। প্রচার উৎসব থেকে বহু যোজন দূরে থাকতে চেয়েও কবি বন্ধুদের চাপে ওইসব কাগজের পাশাপাশি লিখেছেন সারা রাজ্যের অসংখ্য লিটিল ম্যাগাজিনে।
                         অনুরূপা সেন সম্পাদিত মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত মহিলাদের লেখায় সমৃদ্ধ পত্রিকা "আবর্ত্তিতা"এলাকার সাহিত্যচর্চার ইতিহাসে একটি দৃষ্টান্ত। পত্রিকাটির সুবাদে এক সময় অনেক স্থানীয় মহিলা লেখালেখির জন্য কলম হাতে তুলে নিয়েছিলেন। সম্পাদিকা নিজে শক্তিমতি কবি কিন্তু কাব্য সাধনার প্রতি তেমন কোনো যত্নবান না হবার কারণে লেখালেখি আজকাল সীমিত। 
                       মানিক লাল বন্দ্যোপাধ্যায় আরেক প্রতিভাবান কবির নাম। তাঁর কবিতার শব্দ প্রয়োগে মানভূমের ছোঁয়া। সহজ শব্দের ব্যবহারে সাধারণ সব ঘটনা অসাধারণ হয়ে ওঠে তাঁর লেখনীগুণে। কবি গৌতম দত্ত ও অসীম কাজল মাহান্তী সত্তরের দশকের দুই শক্তিমান কবি। বিশ্বম্ভর নারায়ণ দেব আটের দশকের এবং অতনু চক্রবর্তী গত শতকের শেষ দশকের শেষের দিক এবং বর্তমান শতকের প্রথম দিকে অসাধারণ সব কবিতা রচনা করেছেন। গৌতম দত্ত এবং বিশ্বম্ভর নারায়ণ দেব সারা বাংলার কবিতা রচনায় মোটামুটি ভাবে পরিচিত নাম। তাঁরা কম লিখলেও ভালো লেখেন। জগন্নাথ ব্যানার্জীর "হকারের কবিতা"পাঠক মহল কর্তৃক প্রশংসিত।
              গৌতম দত্তের একটি গল্প সংকলন প্রমাণ করে তাঁর ছোট গল্প রচনার দক্ষতা। ছড়াকার হিসেবেও তিনি সুপরিচিত। অসীম কাজল মাহান্তী নিজের ও অপরের অসংখ্য কবিতা মুখস্থ বলতে পারেন অনর্গল। তিনি স্বভাব কবি হলেও বেশিদূর এগোতে পারলেন না নিজের অলসতার জন্য। সমীর দত্ত গদ্য লেখালেখি করতে করতে ,পত্রিকার সম্পাদনা করতে করতে একসময় সাংবাদিকতার জগতে ঢুকে পড়লেন। কিন্তু তিনি নিছক সাংবাদিক নন, তাঁর লেখা ছোট গল্পগুলি কথাসাহিত্যের মূল্যবান দলিল। ঠিক যেমন মানবাজারের সুদীর্ঘকালের সাহিত্য সাধনার ধারক ও বাহক কংসাবতী পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল কুমার দেব ছোট গল্প; সেগুলিও অত্যন্ত মূল্যবান। স্বপন কুমার ছদ্মনামে শতাধিক গল্প লিখেছেন তিনি। বাংলা সাহিত্যের দুর্ভাগ্য সেগুলির কোন সংকলন গ্রন্থ প্রকাশিত হয়নি। অতনু চক্রবর্তী ঈর্ষা করার মত সৃষ্টিশক্তি নিয়েও যেন কবিতা থেকে পাশ ফিরে থাকতেই ভালবাসেন, এটি বড়ো বেদনার‌।
                  প্রায় দুই দশক ধরে ভালো কবিতা লিখে চলেছেন দয়াময় মাহান্তী। কবিতার পাশাপাশি তাঁর গদ্যের হাতটিও বেশ ধারালো।"আমাদের টিউশনি"কবির হাতে উঠে আসা বাংলা সাহিত্যের এক ব্যতিক্রম গদ্য গ্রন্থ। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশ এবং বাংলাদেশ সহ পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত "দেশ"," নতুন কৃত্তিবাস", "নন্দন", "কবিতা আশ্রম" সহ অসংখ্য পত্র-পত্রিকায় তিনি লেখালেখি করছেন। নতুনদের মধ্যে খুব ভালো কবিতা লিখছেন পল্লব গোস্বামী এবং সৌরভ লায়েক। উভয় তরুণ কবিরই একটি একটি করে কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। তাঁদের লেখালেখির বয়স খুব বেশি নয়, কিন্তু যে বিশেষত্ব একজন কবিকে প্রতিষ্ঠার দিকে নিয়ে যায় সেই বৈশিষ্ট্য তাঁদের রচনায় লক্ষ্য করা গেছে। বিষয়টি হল তাঁদের প্রায় প্রত্যেকটি কবিতা অমুদ্রিত ও মুদ্রিত অবস্থায় পাঠ করে দেখেছি আজ যদি আর তাঁদের কবিতার শিরোনামের পাশে কবির নাম লেখা না থাকে, তবুও এ কার কবিতা (?) ---এটি বুঝতে কোন অসুবিধা হয় না।
                        সারা পশ্চিমবাংলার মানচিত্রে মানবাজার একটি ছোট্ট ভূখণ্ড, কিন্তু এই ভূখণ্ডের সাহিত্যচর্চার ইতিহাস নগণ্য নয়।




______________________________________________
আগের সংস্করণের পাঠ প্রতিক্রিয়া 
______________________________________________

১/ সম্পাদকীয়তে তোমার লেখাটি পড়ে অত‍্যন্ত কষ্ট পেলাম। তুমি সবে শুরু করেছো। দীপঙ্করের মতো আমি হয়তো তোমার সঙ্গে অতটা ঘনিষ্ঠ নয় বলে এর ভিতরের কার্যকারণ অনুধাবন করতে পারছি না। কিন্ত তোমার ঈঙ্গিতপূর্ণ শব্দ ব‍্যবহার আমার কাছে রুচিকর বলে মনে হয়নি। হয়তো তোমাদের স্থানীয় কোনো আভ‍্যন্তরীন বিপর্যাসকে প্রতিবিম্বিত করতে চেয়েছ। তবে, আমার সত্তর বছরের জীবনের সামান্য খ‍্যতিহীন যশহীন জীবনে এই প্রবণতাগুলি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেছি। আমাকে ভুল বুঝলেও কিছু করার নেই। আমি অত‍্যন্তই আহত হয়েছি। এইটুকুই বলবার।
                  --------------সাহিত্যিক সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় 


২/ পরপর দুটো সংখ্যা একসঙ্গে পড়লাম। ১২ই চৈত্রর সংখ্যাটা বেশি ভালো লাগল। সম্পাদকীয় দারুণ দুটো সংখ্যারই। ছবির বিভাগটা  খুব ভালো উদ্যোগ।
                               --------------গল্পকার এনাক্ষী রায় 


৩/ খুব ভালো লাগলো । ছবি গুলো অসাধারন ।
                                         ---------------বাপ্পা ভট্টাচার্য 


৪/ বাহ!! পড়ে ফেললাম প্রায় একদমে... খুব ভাল, এগিয়ে চলুক এই প্রচেষ্টা...সম্পাদকীয়টা পড়ে ঋত্বিক ঘটকের একটা ইন্টারভিউ মনে পড়ে গেল, প্রশ্ন টা ছিল "আপনি সিনেমা কেন করেন"। তার উত্তরটা অনেকটা এরকম ছিল -.." যেদিন সিনেমার থেকে শক্তিশালী মাধ্যম আমি পাব, যেখানে আমার কথা আমি বলতে পারব, সিনেমার পেছনে লাথি মেরে আমি সেখানে চলে যাব.." লেখালেখিটাও সেরকমই
                                                       ---------------ময়ূখ দত্ত


৫/ আজ পড়লাম কবি দুর্গা দত্তের কবিতাগুলো।
ওনার প্রথম ও দ্বিতীয় কবিতাটি বেশ সুন্দর।

এই কবিকে শুভেচ্ছা জানাই।
নির্বাচনের জন্য তোমাকে ভালোবাসা।
                                         -------------কবি পঙ্কজ মান্না 


৬/ খুব ভালো লেগেছে আমার। আরও সমৃদ্ধি কামনা করি।
                                 ------------কবি মহিউদ্দিন সাইফ


৭/ খুব সুন্দর। খুব যত্ন করে সাজানো সংখ্যা।
খুব সত্যি দিয়ে সাজানো সম্পাদকীয়।
                                       -------------কবি সুজন পণ্ডা 

______________________________________________

                                                      আমাদের বই










সম্পাদক : উত্তম মাহাত
সহায়তা : অনিকেতের বন্ধুরা
অলঙ্করণ :  আফ্রিকান পেন্টিং, আন্তর্জাল
যোগাযোগ : হোয়াটসঅ্যাপ - ৯৯৩২৫০৫৭৮০
ইমেইল - uttamklp@gmail.com





মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র ।। সন্তোষ রাজগড়িয়া

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র শিল্প ।। মুকেশ কুমার মাহাত

পঞ্চম বর্ষ ।। তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ ।। ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ০২ অক্টোবর ২০২৪