গদ্য, ডরোথী দাশ বিশ্বাস



বিশ্ব ক্ষুধা দিবস


ডরোথী দাশ বিশ্বাস


ক্ষুধা!!! পেটের ক্ষুধা, দেহের ক্ষুধা, মনের ক্ষুধা, জ্ঞানের ক্ষুধা--- কত রকম ক্ষুধা!


পেটে নেই ভাত, লেখালেখিতে কাবার হয় রাত! পেটে নেই খাদ্য, তবু পড়তেই হবে পদ্য, লিখতেই হবে গদ্য, হবে না সে গুরুজনের কথার অবাধ্য।


মেটে নি, মেটে নি ক্ষুধা অপলক চোখে,

     চেয়েছি, মেনেছি হার।

আজ লিখবোই, কিছু লিখতেই হবে-

       এটুকু বুঝেছি সার।


আদুরে আলতো কথা- যাক্ সব

        যাক্ ভেসে ভেসে-

যা কিছু দুষ্প্রাপ্য সুখ- পাই যদি তা

        কুড়িয়ে নিই হেসে হেসে।


রোদ-বৃষ্টি-খেলা- সব শেষ হল,

       হিমঝরা ভোরের হাওয়া

ঝিরঝির কম্পন প্রশাখায়

       শ্লথ হয় আসা যাওয়া।


চূর্ণ চূর্ণ চিন্তা, মাঝে দীর্ঘ বিরতি,

        সময়ের অপব্যয়,

উড়ে এসে জুড়ে বসা স্বরের সঙ্গতি- 

        এ কে কি কবিতা কয়?


তবু খুঁজি সার্থকতা আপন মননে,

        তাই বুঝি শব্দ অন্বেষণ,

অখন্ড অবসর মেলে যদি গোধূলি-গৌরবে,

        সৃষ্টি-সুখেতে ভরে প্রাঙ্গণ।


এ হলো কবিতা লেখার ক্ষুধা।


সব ছাপিয়ে পেটের ক্ষুধা যা শরীর ধারণ করার সাথে সাথে পুষ্টি, বৃদ্ধি প্রক্রিয়া ও রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতার সাথে জুড়ে যায়। বিশ্ব ক্ষুধা দিবস! শুনলেই মনটা কেমন হু হু করে ওঠে। ক্ষুধার দিন--- ক্ষুধার রাত--- ক্ষুধার আবার দিন রাত আছে না কি? জন্মের পরই শিশু বিশ্বগ্রাসী ক্ষুধা নিয়ে মাতৃস্তন্য পান করে। ক্ষুধা না থাকলে খাদ্যগ্রহণ, পরিপাক, পাচিত খাদ্য শোষণ, আত্মীকরণ ও অপাচ্য অংশের বহিষ্করণ- এসব ঝামেলা থাকতো না। পুষ্টি প্রক্রিয়া বলতে কিছু থাকতো না, বৃদ্ধি স্থগিত হতো। প্রাণী পুষ্টির এই পাঁচটি পর্যায় হলো শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। শরীর ধারণ করলে এই প্রক্রিয়া অবশ্যই থাকবে। অথচ আমরা কি দেখি? জন্ম হয় যে হারে, খাদ্যের সংস্থান নেই সে হারে। 


রাষ্ট্রসঙ্ঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফ এ ও) এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী পাওয়া পরিসংখ্যানগুলি নিম্নরূপ

এই বিশ্বের প্রতি দশ জনের মধ্যে একজনকে ক্ষুধা সয়েই ঘুমিয়ে পড়তে হয়।এই বিশ্বে অভুক্ত মানুষের সংখ্যা ৮২.৮ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ। ২০১৯ - ২০২১-এর মধ্যে মাত্র দু'বছরে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১৫ কোটি। আর সবচেয়ে দুঃখজনক হলো, এই বিশ্বের প্রতি চারজন ক্ষুধার্তের মধ্যে একজন হলো ভারতীয়। অথচ ভারত মোট জাতীয় উৎপাদনে বিশ্বে পঞ্চম বৃহত্তম দেশ। বিবেকানন্দের 'নতুন ভারত' ক্ষুধার সূচকে নেমে যাচ্ছে ক্রমশঃ।


চরম ক্ষুধার কবলে পড়ে অপুষ্টিজনিত অসুস্থতার শিকার এমন মানুষের সংখ্যা বর্তমানে পৃথিবীতে ২৫,৮০,০০০০০.


পারিবারিক ও সামাজিক বঞ্চনার শিকার বলেই বিশ্বে ক্ষুধার্তদের দুই তৃতীয়াংশ কিশোরী ও মহিলা।


যেখানে জলবায়ু উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, অথবা যে ভূখণ্ড যুদ্ধে লিপ্ত হয় বারবার সে জায়গা বা ভূখণ্ড কৃষি ও পণ্য উৎপাদনের জন্য সমস্যাসঙ্কুল এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। সেখানে বিশ্বের মোট ক্ষুধার্তের আশি শতাংশের বাস।


২০২২ সালে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এই দুই দেশ খাদ্যশস্য, তৈলবীজ ও সারের দুটি বৃহত্তম বৈশ্বিক উৎপাদনকারী। এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটে। এর ফলে শস্য, সার ও জ্বালানীর মূল্যবৃদ্ধি ঘটে।


যুদ্ধ, মহামারী বা অতিমারীর কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, কর্মী ছাঁটাই- এসব হলে অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলানোও খুব সহজ কথা নয়। কাজ হারিয়ে ক্ষুধার্তের সংখ্যা বেড়ে যায় তখন। চিনি, মাংস, দুধ, দানাশস্য, ভোজ্যতেলের সঙ্গে অন্য খাদ্যদ্রব্যের দাম ধরে সূচক তৈরি করে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা। এই সূচকের মান ২০১৯ থেকে ২০২২-এর মধ্যে ৯৫.১ থেকে ১৪৩.৭-এ পৌঁছেছে। অথচ আন্তর্জাতিক স্তরে বেঁচে থাকার জন্য ২১ শতাংশ ভারতীয়র-ই প্রয়োজনীয় আয় ১.৯ ডলার দিনে জোটে না। বিশ্বের ক্ষুধার্তদের ২৫ শতাংশই ভারতীয়। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারত ১২১ দেশের মধ্যে নেমে পৌঁছেছে ১০৭-এ। 


 জাতিসংঘের ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড (এস ও এফ আই)-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বেশিরভাগ অপুষ্ট জনগোষ্ঠী এশিয়ায় বাস করে। যেখানে ২০২১ সালে প্রায় ৪২৫ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুধার্ত। তবে আফ্রিকায় ক্ষুধার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি, ২০২১ সালে ২৭ কোটি ৮০ লাখ মানুষ ক্ষুধার প্রকোপে পড়ে।


ক্ষুধা নিরসন হয় একমাত্র নিয়মিত প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণে। দারিদ্র্যজনিত ক্ষুধার অবসান ঘটাতে নিবেদিত একটি বৈশ্বিক সংস্থা 'দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট' একটি বার্ষিক ইভেন্ট হিসাবে বিশ্ব ক্ষুধা দিবস প্রতিষ্ঠা করে। এই দিনটিতে এই ইভেন্ট একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করে যা ক্ষুধার মূল কারণগুলিকে চিহ্নিত করে সে সমস্যাগুলোর মোকাবিলা করে ও খাদ্য নিরাপত্তার প্রচার করে।


বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সহায়তায় পৃথিবী দ্রুত বদলে যাচ্ছে। বিশ্বের জনসংখ্যা ৮.১১ বিলিয়ন। জাতিসংঘের মতে বিশ্বের মোট জন সংখ্যার প্রায় ১০% অর্থাৎ প্রায় ৮২০ বিলিয়ন মানুষ ক্ষুধার্ত। ৩৫০ বিলিয়ন মানুষ চরম ক্ষুধায় পীড়িত। এই তথ্য মানবজাতির অগ্রগতির উপর অন্ধকার ছায়াসম। জনসংখ্যা ক্রমবর্ধমান হলেও মানুষ অন্য গ্রহে বসবাসের কথা ভাবতে পারছে বিজ্ঞানে বলীয়ান হয়েই। সবার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদিতও হচ্ছে। তাহলে কেন আজ মানবতা ক্ষুধা নির্মূল করতে অপারগ?


কারণ আছে। উচ্চ আয়ের দেশগুলিতে যেখানে প্রয়োছনের তুলনায় দ্বিগুন খাদ্য উৎপন্ন হয়, আর বিবাহ বা অন্য আমোদ উৎসব বা আনন্দ অনুষ্ঠানে ৪০% খাদ্য নষ্ট হয় যা ক্ষুধা উপশমে কাজে আসতে পারে।


বন্যা, খরা, ঝড়ঝঞ্ঝা, ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও চরম আবহাওয়া মানুষকে অনাহারের দিকে ঠেলে দেয়।


দারিদ্র্য ও সম্পদ বণ্টনে অসাম্য হলো ক্ষুধার মৌলিক কারণ। শুধু ভারতের কথাই ধরি: গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স অনুসারে ১২৫টি দেশের মধ্যে ভারত ১১১ তম স্থানে রয়েছে। ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন রিপোর্ট করেছে যে ভারতে প্রায় ২২০ মিলিয়ন মানুষ অপুষ্টির সম্মুখীন, পাঁচ বছরের কম বয়সী ২২.৩% শিশু বয়স অনুযায়ী লম্বা নয় এবং ৬.৮% শিশু বয়স অনুপাতে কম ওজনের- এই উভয় তথ্যই অপুষ্টির সূচক। ১৯৬০-এর সবুজ বিপ্লবে ভারত কৃষিসহ অনেক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। তা সত্ত্বেও ক্ষুধা নির্মূল হয়নি। জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান আয় খাদ্যের চাহিদা বাড়িয়েছে, বিশেষ করে পুষ্টিকর খাবার। যদিও ভারত অনেক কৃষি পণ্যের একটি নেতৃস্থানীয় উৎপাদক, খণ্ডিত জমি, সেকেলে প্রযুক্তি এবং অনুন্নত অবকাঠামো উৎপাদনশীলতাকে বাধাগ্রস্ত করে। আবহাওয়া নির্ভরতা, বিপণন, এবং বিতরণ সমস্যাগুলিও অব্যাহত রয়েছে। তবু আশা রাখি যে, শক্তিশালী নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং সমবায় চাষের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলি মোকাবিলা করার জন্য ভারতের অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষমতা রয়েছে। 


ক্ষুধা উপশমের জন্য শান্তি চাই। মানুষকে খুব শান্তিপ্রিয় হতে হবে। অপচয় রোধে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে। যতই জাতিসঙ্ঘের সংস্থাগুলি খাদ্য সরবরাহ করার চেষ্টা চালিয়ে যাক্, বোমা বন্দুক অধ্যুষিত দ্বন্দ্বকবলিত অঞ্চলে খাদ্য সংগ্রহ করাই তো অকল্পনীয়। ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব অর্জনের লক্ষ্যে জাতিসঙ্ঘ দ্বারা জিরো হাঙ্গার প্রোগ্রাম ২০১২- তে চালু হয়।    


ক্ষুধামুক্ত পৃথিবীর লক্ষ্যে কাজ যে হচ্ছে না, তা নয়। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউ এফ পি) হল জাতিসংঘের বৃহত্তম সংস্থাগুলির মধ্যে একটি যা প্রতি বছর প্রায় ৮৩টি দেশে ৮৬.৭ মিলিয়ন মানুষকে সাহায্য করে এবং জরুরী পরিস্থিতিতে খাদ্য সহায়তা দেয় ও পুষ্টি বাড়াতে সাহায্য করে।


এই সমস্যাগুলি সমাধানের কিছু সম্ভাব্য উপায়:  

১। খাদ্যের অ্যাক্সেস বৃদ্ধি, 

২। কৃষির উন্নত উৎপাদনশীলতার দিকে নজর দেওয়া, 

৩। কৃষি ও খাদ্যের জন্য সামাজিক সুরক্ষা জাল শক্তিশালী করা, 

৪। উন্নত কৃষিব্যবস্থা প্রচার করা, 

৫। খাদ্যের অপচয় হ্রাস করা এবং 

৬। ক্ষুধার মূল কারণগুলিকে মোকাবিলা করা।


বিশ্ব ক্ষুধার কবলে পড়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হলো সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়া। যদিও নিম্ন আয়ের দেশগুলিতে ক্ষুধার্তের সংখ্যা সর্বাধিক বিস্তৃত, ক্ষুধা উন্নত দেশগুলিকেও প্রভাবিত করে, যেখানে রয়েছে দারিদ্র্য এবং অসাম্য।


'বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার চাপ'-এর মত বিষয়টিকে প্রতিফলিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হলো বিশ্ব ক্ষুধা দিবস পালনের মুহূর্ত। এই বার্ষিক ইভেন্টটি দীর্ঘস্থায়ী ক্ষুধা এবং বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা মোকাবিলায় ও স্থায়ী সমাধানের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে নিবেদিত। 


এ দিবস পালনের জন্য প্রতি বছর একটি থিম নির্দিষ্ট করা হয়। থিমটি ক্ষুধার বিভিন্ন দিক এবং খাদ্য নিরাপত্তা এবং এ বিষয়ে স্থায়ী উন্নয়ন অর্জনের উপায়গুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এ বছর বিশ্ব ক্ষুধা দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- সমৃদ্ধিশীলা মা। সমৃদ্ধ বিশ্ব। দিবসটির লক্ষ্য লক্ষ লক্ষ লোকের মুখোমুখি সংগ্রাম সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা যাদের সঠিক পুষ্টির অ্যাক্সেস নেই। এই দিনটি ক্ষুধা নির্মূল করার জন্য সকলের জন্য কর্মের আহ্বানও জানানোর দিন।


 বিশ্ব ক্ষুধা দিবস প্রথম ২০১১ সালে 'দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট' দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, এটি একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যা বিশ্ব ক্ষুধার স্থায়ী অবসানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


'দ্য হাঙ্গার প্রোজেক্ট' ছাড়াও ক্ষুধা এবং খাদ্য জোগান সংক্রান্ত প্রচারে জড়িত আরো বিভিন্ন সংগঠন ২৮ মে বিশ্বজুড়ে ‘ক্ষুধা দিবস’ পালন করে। উদ্দেশ্য, ক্ষুধার সঙ্কটের পিছনে রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা এবং বিশ্বস্তরে চিন্তার গলদ তুলে ধরা।


বিশ্বজুড়ে ৮০০মিলিয়নেরও বেশি মানুষ দীর্ঘস্থায়ী ক্ষুধা এবং অপুষ্টিতে ভুগছে, যা গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে--- দিবসটির লক্ষ্য হলো এই সত্য তথ্যগুলির জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করা। 


'দ্য হাঙ্গার প্রোজেক্ট'- নামক এই ক্ষুধা প্রকল্পটি আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া এবং ল্যাটিন আমেরিকা জুড়ে একসাথে কাজ করে, স্বনির্ভরতা, শিক্ষা এবং স্থানীয় সম্পদের কার্যকর ব্যবহার প্রচার করে। বিশ্ব ক্ষুধা দিবস তাদের বৃহত্তর মিশনের অংশ যা বিশ্বব্যাপী মানুষকে ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উপযুক্ত ও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করে।


সবশেষে আমার ব্যক্তিগত মত: 


"এবার কঠিন, কঠোর গদ্যে আনো,/পদ-লালিত্য-ঝঙ্কার মুছে যাক,/গদ্যের কড়া হাতুড়িকে আজ হানো।/প্রয়োজন নেই, কবিতার স্নিগ্ধতা,/কবিতা তোমায় দিলাম আজকে ছুটি/ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী-গদ্যময়:/পূর্ণিমা-চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।"- কিশোর কবির অমোঘ উক্তি, পেটে ক্ষুধা থাকলে কাব্য আসে না। কিন্তু পেটের ক্ষুধা শিখিয়ে দিক কিভাবে বাঁচতে হয়। মাথার ওপর ছাদ নেই, পায়ের নীচে মাটি নেই, পেটে ভাত নেই, প্রদীপে সলতে নেই, তেল নেই... এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে কঠোর পরিশ্রম করে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা উচ্চশিক্ষা বা বৃত্তিমূলক বা কারিগরী শিক্ষা নিতেই হবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। জীবনযুদ্ধে পাওয়া অভিজ্ঞতা দেবে নৈতিক শিক্ষা। শুধু নিজে দারিদ্র্যকে জয় করলেই হবে না, টেনে তুলতে হবে অন্যান্যদেরও। হ্যাঁ, কোনো রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে বা এন জি ও-র মাধ্যমে নয়, একক প্রচেষ্টায়, ব্যক্তিগত স্বার্থে। চারপাশে সবাই ভালো থাকলে নিজেও ভালো থাকা সম্ভব।


(তথ্য সূত্র: উইকিপিডিয়া)





মূল পাতায় যান


মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র শিল্প ।। মুকেশ কুমার মাহাত

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র ।। মুকেশ কুমার মাহাত

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। নাচনী শিল্পীদের আলোক-চিত্র ।। সন্দীপ কুমার