দ্বিতীয় বর্ষ ।। তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ ।। ৯ জৈষ্ঠ্য ১৪২৮ ।। ২৪ মে ২০২১
সংঘমিত্রা চক্রবর্তীর কবিতা
১.
অক্সিজেন চাই
চিঠির গন্ধে ভাল হয়ে গেলো মন
তোমার ওমানে বৃষ্টি মুখর দিন
বাংলার মেঘে দূষণের পুরু সর
পুরনো স্মৃতিতে ডুব দেয় মালকিন।
আমার জীবনে ঝড়ে পড়ে গেছে ঘর
পোষা টিয়াপাখি উড়ে গেছে খাঁচা খুলে
বাতাসে অবশ্য টান ছিল এলোমেলো
তাই তো কিছুটা বেঁচেছে ছিন্নমূলে !
ওখানে তোমার খবরের শিরোনাম
কী কী চোখে লাগে , মনে মনে রাগ লাগে ?
আমার এখানে ঝাড়ামালগুলো সব
প্রয়োজন মত সুবিধাভোগীরা জাগে !
২.
ফাইট মাস্টার
অল্পবিস্তর দেমাক থাকা ভাল
একটু গম্ভীর মানিয়ে যায় বেশ
ছ্যাবলা লোকগুলো এমন ঠোঁট চাটে
সুদিন ফিরে পেলে দেখাবে অনিমেষ
পিছনে মারবে না এমন জোরে লাথ
ফোঁকলা বুড়োদাদু বড্ড চুলকায়
আমি তো বসে আছি ফাইট মাস্টার
ম্যাজিক দেখবার স্বপ্ন ভরসায়!
তুমি কি দূরে দূরে পালাবে শয়তান
মিষ্টি কথা বলো ধান্দাবাজ যেন
শ্রমিক ভাবো নাকি ? নাদান বোকামেয়ে
আমিও ডায়মন্ড , সোনায় সামলানো !
৩.
মন
হাড় নেই, কাঁটাখোঁচা নেই, সহজ-সরল আবেগের অংশ
সেখানে হুমকি দিয়ে তুমি
আক্রমণ করছো পিস্তল দেখিয়ে
ডাকাতের মতো তুমি জোর করে কেড়ে নিচ্ছ চুমু
পট পট করে সব হুঁক - বাধা ছিঁড়ে ফেলে হৃদয়কে বানিয়েছ বারোয়ারি গলিপথ
আমি একজন সূক্ষ্মতার মন নিয়ে ভাষার ফসল বুনি
রাগ বেশি হলে কাঁদি , খুব চিৎকার করে কাঁদি
কিন্তু কাউকে বলি না গোপন দুর্বলতার কথা
জানি মনে মনে সবাই হিসেব করে নিজের লাভের মধু
আমি ক' দিন না খেয়ে পড়ে রইলাম ঘরে
এসব শুনবে কেন !
কার মরণ পড়েনি আমার রোগের কষ্ট শুনে নষ্ট করবে সময়
সুখের পিছনে সবার লাইন
ইট পাতা
একজন খুশি পেয়ে গেলেই ফুড়ুৎ করে উড়ে যাচ্ছে
অন্য ডালে ।
তুমি বলেছিলে বন্ধু হবে
স্রেফ বন্ধু
প্রেমিকের মতো পাগল টাইপ নয়
সন্দেহ বাতিক নয়
একদম মুক্তমনা
কিন্তু আজ তোমার ভাষার কী ছিরি
খিস্তি দিয়ে যন্ত্রণা বাড়াও
লোকে বলেছিল বটে সবটাই ঢপ
প্রথমে নরম করে সুড়সুড়ি দিয়ে
শেষে কিনা ভালোবাসা তোমার চেহারা দেখলাম এতটা অসভ্য !
৪.
জন্মদাতা
তোমার কি একবারও মনে হয় না
আমার কলমকে একটু আদর করতে
ছোট্ট একটা কমেন্ট করলে তোমার মহৎ কীর্তির
অমূল্য পাতায় কী এমন কুৎসার ছিটে লাগত গো?
আড়ালে বলতে গেলে তুমিই তো আমার কবিতার বাবা
সেই যে দুপুরে এলে
নির্জন নিহারিকা নামের বাড়ি
স্বামী ছিল না বাড়িতে
মেঘ জমেছিল গ্রীষ্মের কোণে
উদাসী হাওয়া উড়িয়ে নিয়ে গেল আমাদের
মন
চা করলাম
তুমি বললে লেখার খাতাটা নিয়ে এসো আগে
মনে পড়ে কাঠ মলাটের বিবর্ণ পাতায়
লেখা ছিল আমার আড়ষ্ট অক্ষরমালা!
মুগ্ধ হয়েছিলে নিজস্বতা দেখে
আনন্দে কিছুটা গরম চা চলকে পড়েছিল প্যান্টে
আমি বললাম ইশ্
প্রিয় কবি তুমি ছিলে ডোন্ট কেয়ার
খুঁটিনাটি দেখছিলে ছন্দ,বানান
স্বরবৃত্ত পড়ে সাবাশ সাবাশ ...
তোমার আসা-যাওয়া বাড়ল তারপর
মা হলাম আমি সফল সন্তানের।
৫.
নতুন করে
কাপুরুষ তুই হাসির খোরাক পেচ্ছাপ করি বেইমান
ফেসবুক থেকে মুখে ঝাঁটা মেরে বন্ধ করেছি গান
ধুয়ে নিয়ে ঠোঁট আবার নতুন জমিয়েছি চাকে মধু
কে বলবে চেনা সেই কবেকার ঘোমটার বৌ'টি
স্মার্টনেস দ্যাখ এখনও কেমন পতঙ্গদের ডানা
পুড়ে যায় এসে খুব ভালবেসে মরে যেতে নেই মানা!
ঝাঁকের মধ্যেই দু-একটি কেউ সার্টিফিকেট নিয়ে
চট্টগ্রামের দেখতে দারুন বশ করি চুমু দিয়ে!
সম্পাদক : উত্তম মাহাত
সহায়তা : অনিকেতের বন্ধুরা
যোগাযোগ : হোয়াটসঅ্যাপ - ৯৯৩২৫০৫৭৮০
ইমেইল - uttamklp@gmail.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন