দ্বিতীয় বর্ষ ।। ত্রয়োবিংশতি ওয়েব সংস্করণ ।। ১৫ ফাল্গুন ১৪২৮ ।। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২

ইউক্রেনে রাশিয়ার সৈন্য প্রবেশের পর অন্তত পক্ষে ৬৪ জন নাগরিক নিহত হয়েছে। এবং ১ লক্ষ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা। মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পাশের দেশে আশ্রয় নিয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫ টা পর্যন্ত, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিভাগ ওএইচসিএইচআর কমপক্ষে ২৪০ জন নাগরিকের হতাহতের খবর দিয়েছে, যার মধ্যে কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় বিভাগের একটি পরিসংখ্যান প্রতিবেদন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকৃত পরিসংখ্যান ‘যথেষ্ট বেশি’ হতে পারে। 
              তারপর শুরু হয়েছে সাইবার এটাক। ইউক্রেনের সমস্ত সরকারি ওয়েবসাইট, ব্যাঙ্ক ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়েছে। যাতে তারা চাপের মুখে পড়ে রণভূমি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
              এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে মানুষ কতটা অমানবিক হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে যে সময় সারা বিশ্বের মানুষ কোরোনা মহামারীতে বিধ্বস্ত, সামাজিক, অর্থনৈতিক শিক্ষা, স্বাস্থ সমস্ত দিক থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, ঠিক সেই সময় এমন একটা পরিস্থিতি কি কাম্য ছিল?
                একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর পৃথিবী ধ্বংসের জন্য প্রাকৃতিক বিপর্যয় আসে কিনা জানা নেই। তবে মানুষের মানসিক বিপর্যয় যে অবশ্যই নেমে আসে তা স্পষ্ট করে দেখিয়ে দিচ্ছে এইসব ঘটনা পরম্পরা।



উত্তম মাহাত, সম্পাদক 



______________________________________________
যাঁদের লেখায় সমৃদ্ধ হলো এই সংস্করণ
______________________________________________
হাবিবুর রহমান এনার / পল্লব গোস্বামী / সুপ্রিয় দেওঘরিয়া / সুজন পণ্ডা / উৎপল চট্টোপাধ্যায় / দীপ্তিশিখা দাস / দেবাশীষ সরখেল / দীপংকর রায়
______________________________________________


সুফি

হাবিবুর রহমান এনার


যে কোনো সময়--- যে কোনো স্থানে
অচ্ছেদ্য...
                            আমরা পরস্পর

যেখানেই আমি সেখানেই তুমি---
এটাই চুক্তি...
                              হে আমার ঈশ্বর

ভাবনায় কি ছিল--- সুফির চিন্তা-
চেতনাজুড়ে...
                               থাকবে লক্ষ কেরামতি

মুসাফির
আমি...
               অঙ্গে মাখি...
                                 সুফির পদধূলি







পল্লব গোস্বামী - এর কবিতা 

১.
হরিণদের হাঁটা পথ 


বনের যে পথটি পেরিয়ে
হরিণেরা প্রতিদিন জল খেতে যায় 
সেই পথটিও জানে, 
জল ও হরিণের সম্পর্ক 

হয়তো,বিকলাঙ্গ 
অন্ধ শাবকটিও বোঝে
সকল ইঙ্গিত 

তারপর সারাবেলা টুপটাপ টুপটাপ 
মাঝরাতে অলৌকিক শনশন

অসম্ভব তছনছ পেরিয়ে 
আসে একটি নতুন ভোর - নতুন পথ -
নতুন পুকুর 

বিষণ্ণ হরিণ-মাতার,জখম বোঁটা থেকে  
গলে পড়ে নতুন দুধ ... 




২.
মেঘ হয় মাছরাঙা 


বাঁশপাতা মাছের ঝাঁকে আলোর ঠিকানা লেখা আছে। 
তবু একটি বোকা মেয়ে, 
আমাকে মৃত ভেবে 
বিধবা সেজেছে। 

আমিও নিজেকে মৃত ভেবে দেখেছি,
আমাকে ছাড়াই দিব্যি চলছে পৃথিবী

শুধু , একটি ইক্ষু ক্ষেতের আলে 
কিছু কাকলাস মরণপণ গান জুড়েছে 

আর তখনই একটি মাছরাঙা 
           পুকুর থেকে
                নদী থেকে 
                    ঝর্ণা থেকে
জল ছুঁয়ে ছুঁয়ে, মেঘ হয়ে গেছে। 



৩.
অরণ্য ষষ্ঠীর দেশে 


হে জল, হে কচুরিপানার ঢেউ 
হে জেগে ওঠা শ্যাওলা 
আমাকে প্রকাশ করো 

আমাকে দাও দলশামুকের গান, 
মা ষষ্ঠীর ঘটে পোঁতা ডাল 

হে শিল, হে পিটুলি, হে মঙ্গল ঘটে আঁকা
হিজিবিজি মূর্তি 
তোমরা বিড়ালীর দুধ দিয়ে আরও আরও শিশুসন্তানের তৃষ্ণা মেটাও 

আমাকে ডুবিয়ে রাখো সেই গুগলির শরীরে, শীতল করো 

কোনো এক জীর্ণ হাসপাতালে, 
অজানা রোগে গলে পড়া একটি বাচ্চা মেয়ে খুব কাঁদছে 

আমাকে করো তার কান্নার আরাম,
কোনো এক অসুখ বিবর্জিত অরণ্য ষষ্ঠীর দেশে। 






মাতৃভাষা

সুপ্রিয় দেওঘরিয়া


রবীন্দ্রনাথ হেঁটে চলেছেন পদ্মার পাড়ে।
জলে চিক্ চিক্ শান্ত জ্যোৎস্না,
শিলাইদহে তাঁর লাইনগুলি 
বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে,
তারা যেন বলছে -
আমরা শুনছি মাতৃভাষার মধুর সুর।

জীবনানন্দ রূপসী বাঙলার 
ট্রামে চড়ে দেখছেন বৃক্ষরাজির পাশে
আশ্র‍য় নেওয়া স্বরবর্ণের স্নিগ্ধতা,
আমিও ভাবছি তারাও যেন 
মিশে আছে গঙ্গায় পদ্মায়,
ঝুমুর-বাউল-ভাটিয়ালি হয়ে
লোকাল ট্রেনের ভিখারি গায়কের 
হারমোনিয়ামের সুরে বেজে উঠছে।

বীরভূমের মাটিতে অজয়ের বাঙলা,
মেদনীপুরে কাঁসাইয়ের,
পুরুলিয়াতে সুবর্ণরেখার,
মুর্শিদাবাদে নবাবি বাঙলা,
গঙ্গার পাড়ে পলল বাঙলা,
চট্টগ্রামে পাথুরে বাঙলা,
সীমান্তে রক্তাক্ত বাঙলা, বেদনার্ত।
সব বাঙলা হাঁটছে একই গন্তব্যে-
ঢাকা, কলকাতা, শিলচর, আগরতলা হয়ে
কোনো প্রান্তিক বটগাছের নীচে একটু দাঁড়াবে বলে,
যেখানে সবাই বলবে নিজের ভাষা, 
জন্মের ভাষা, মায়ের ভাষা।







সুজন পণ্ডার কবিতা

আঙুলে আঙুল রাখো....


আঙুলে আঙুল ছুঁয়ে দাও।
আমি জানতে চাই
ঠিক কতোটা ভালোবাসায়
ঠোঁটে সূর্যাস্তের লাল জেগে ওঠে।
পিঠে তারা ফোটে।
আমি জানতে চাই
মানুষ মানুষকে ঠিক কতটা ভালোবাসে।
ঠিক কোন স্তরে ব্যারিকেড ভেঙ্গে যায়, 
শুধু দ্রোহীর আলিঙ্গনে
শিথিল হয় রাষ্ট্রের অহংকার।
আমি জানতে চাই
ঠিক কোন ভালোবাসায়
ধুলোর সাথে ধুলো মিশে
সৃষ্টি হয় অজস্র নক্ষত্রের।
এসো হাতে হাত রাখো
আঙুলে আঙুল
পথে পায়ে ডাক দাও-
এসো।
আমি নতুন পৃথিবীর জন্ম চাই।



আকাশে শ্রাবণ মেঘ


১.
কোথায় নেমে যায় সূর্য
শাল গাছের মাথা ছাড়িয়ে গুঁড়ি
গুঁড়ি ছাড়িয়ে শিকড় ।
কোথায় হেঁটে যায় যুবতী
ঘর থেকে শুকনো মাঠ
শুকনো মাঠ পেরিয়ে অভাবের সংসার।

শুধু পায়ের মল সন্ধ্যা তারার মত
জ্বলজ্বল করে।


২.
কারো কারো মুখে এমন শূন্যতা
আঁকা থাকে, মনে হয় হারিয়ে যাই।
নিখাদ নির্ভেজাল মহা শূন্যের সুন্দর।
শতাব্দীর বিষণ্ণ বাতাস
চুলের কোল ঘেঁষে স্থায়ী হয় বহুক্ষণ, 
চোখে ফুটে ওঠে 
দিগন্তের ধূসর পাহাড়। 

আর বর্ষায় প্লাবিত নদীর রেখা।







ক্লান্ত পল্লব 

উৎপল চট্টোপাধ্যায় 


প্রতিটি শব্দ ভার খুলে তোমাকে দেখি 
পিছল প্রপাত 
জলও শরীর আঁকে
লুকিয়ে লুকিয়ে আমি
তোমার বসে থাকা দেখি 
অনন্ত শীর্ষ.............অন্তহীন সময়
যেখানে নিসঙ্গ ক্যালেন্ডারে শুধু 
আন্তর্জাতিক ছোপদাগ 
পা হতে বুক অনাদি সঞ্চয়ের শিথিল শিশ্নে
জাগে আগুন 
ক্ষয় বোধে জ্বলে ওঠে মেঘ . . . মেঘের পালক 
আরও আরও ক্ষুধার্ত শেয়াল 
এরপরও সবুজ সন্ধানে আলো 
স্বপ্ন দোষ কেটে গেলে জ্বরাগ্রস্থ দেহে 
যত নির্বিকার ক্রোধ 
পাহাড়ের সানুদেশে এসে হয়তো 
নদীও লজ্জা পেয়েছিলো সেদিন






দীপ্তিশিখা দাসের কবিতা


১.
সেইতো বেঁচে আছি কোথাও 


নিবিড় খাঁ খাঁ বালুচরীর কাছে কাদের জন্য চলেছে এই শহর তবুও যে লাফিয়ে লাফিয়ে
দিক শূন্যে......... জানি না? 

বাইরে ভেতরে 
মানুষের অভাবে কতকাল ঘরহীন ইতিহাসে 
ঘুরপাক খেয়ে আছড়ে পড়ে নোনা মন পাখি 
সামুদ্রিক হাওয়ার সাথে আমার অনন্তে 
ভাসতে ভাসতে।

সমস্তকিছুইতো 
ফাঁকা মাঠের দৌড়, 

আজ তো আবার অন্তহীন জাগরণের আক্রমণ নিঃসরণ করে বেঁচে থাকা। 

নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধাদের লড়াই শেষ হতে চায় না শরীরে, 
রক্ত ভেজা রাতের রঙ থমকে দাঁড়ায় 
ভীষ্মের অজস্র যন্ত্রনায় আক্রান্ত মহাভারতের পাশে একটুখানি কষ্ট ভাগ করে নিতে যেন।

আমি কেন 
ভীষ্মের মিথ্যে 
জয়ের কাহিনী অযথা
দুই চোখে বয়ে যাবো 
শেষ থেকে শুরু 
বলতে পারো ? 
তোমার নগরীর চাঁদ সত্যিই কি কাঁদবে 
তার মৃত্যু বরণে কখনো 
বলো ? 

কোনো নির্দিষ্ট ঠিকানা প্রকাশ পায়নি ,
তাইতো যত কথারা 
রেল গাড়ির 
বন্ধ কামরায় 
বুক চাপড়ে মরে আর মরে স্টেশনেই। 
কি বিরক্তিকর সেই অন্ধকার চারপাশে আমার চলাচল , 
থামতে গেলে 
আতঙ্ক বুকের উপর রক্তগঙ্গা বইয়ে বাড়ি-ঘর ভাসিয়ে আরও খানিক যাযাবর বানিয়ে ফেলে আমাকে.....। 

আমার তো ঘর নেই ;
যাটুকু আশ্রয় 
তা তোমার চোখের 
ভ্রুতে লুকিয়ে বেঁচে আছে হয়তো কোথাও!

পথ জুড়ে শুয়ে আছে ঘোর নৈশবাদল........



২.
কাটাকুটি খেলা

 
বরঞ্চ খানিক লিখি তোমাকে গাঢ়ভাবেই .... ;
তুমি যেন মেঘ পাখির দুই চোখের ভেতর ভেঙেচুরে চলেছো শহুরে সকল পথ,
ছুটে চলে পাতায় পাতায় পথের উপর বেনামী সব সম্পর্ক.....কোথায় যে!! 

স্বপ্ন গুলো একটু একটু ভিজে ঘুমের মাঝে তরঙ্গ বুদবুদ উড়িয়ে ,
কার জন্য নদী হতে চায়  মাঘ প্লাবনে 
তোমার রক্তের বিষ ? 

হয়তো বিশাল গন্ডি পেরিয়ে যেতো ইচ্ছে ফড়িং ঐ,
আকাশ তাই আজ একটু বেশিই নীলাভ করেছে পাহাড়ের রঙ...., 

ভয়ঙ্কর সরীসৃপের ঘুমের মতো উলটে পালটে পরিনত হয় 
কোঁকড়ানো ভালোবাসা । 

ছুঁয়ে দেখি তোমায় বন্ধ ঘরের গুমোটেও, 
মায়াজালে বেমালুম ঘাপটি মেরে স্বপ্ন পোহায় 
সমস্ত উষ্ণতা 
মহা প্রেমের আদরে শরীর ঘেঁষে । 

দেহ ভাঙার খেলায় কাটাকুটি চিহ্ন ছাপে খালি বুকের মধ্যে ........







তারা ,হাঁস ,জোনাকি ও শিয়ালের থাবা  

দেবাশীষ সরখেল


সন্ধ্যাতারা ফুটে উঠলেই  নিঝুম ধরণীতলে  একটি শেয়াল তক্কে তক্কে থাকে।
দিঘি জল ত্যাগ করে হাঁস।
রক্তে লাল সন্ধ্যার আকাশ
            শেয়ালের ঠোঁটে ঝোলে লাজবতী হাঁস ।
সন্ধ্যা হলেই আধবাঘাদের গন্ধে গুমোট পয়সাগাড়ি ।

সবারই আড়ি
কিভাবে যে ভাব হয় জানে
প্রকৃত জহুরী ।
সন্ধ্যাতারা ফুটে উঠলেই চারদিকে  পুরুষগন্ধ ফুলদল    চুরি ও ছিনারি ।
কামিনী ও নয়নতারা আড়ালে ।
তারার কাঁপন টের পায় জোনাকির  ডানা  সন্ধার আঁচলে ।
ফুল ঝরে 
নবজন্মের বিকাশ পঞ্জিকা রচিত হতে থাকে 
রাত্রির গহনে ।
তখন যে তারাটি জেগে থাকে
সে চেনে না সন্ধ্যাকে ।
তখন ধরণীতলে শিয়ালের ঠোঁটে হাঁস ।
চরাচরে  স্নিগ্ধ মৃদু  মিহিন বাতাস ।



________________________________________________

ঔপন্যাসিক দীপংকর রায়ের ধারাবাহিক উপন্যাস---
"জলশ্যাওলার বিরহকথা" --- এবার চতুর্দশতম পর্ব
________________________________

জলশ্যাওলার বিরহকথা

দীপংকর রায়


              নতুন ঠান্ডা পড়েছে। গায়ে একটা চাদরও দেওয়া হয়নি । এমনি এমনিই বাইরে বেরিয়ে এসেছে । উঠোনের মাঝে চক্কর খাচ্ছে যেন। কেউ জেগে গেলে কী মনে মনে ভাববে? বাঁ পাশের রান্নাঘরের মাথার উপরে বাঁশঝাড়ের মাথায় কিসের যেন ঝপাং করে আওয়াজ হলো। পুয়ো গাছের থেকে কদম গাছের ডালপালাতেও ঝপ ঝপ করে আওয়াজ। মনে হয় সেই ভাম বেড়ালটাই হবে হয়তো! সেই কি, যাকে সে এর আগেও কয়েক দিন দেখেছে ওই জায়গাগুলোতে ঘোরাঘুরি করতে। কিন্তু সেই কি? হয়তো সে নয় , নয়তো অন্য আরো একটি। যে হয় হোক গে। যেদিকে যায় ওরা যাক না। তাতে কার কী! ওদের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই তো! ওরা তো কাউকে দাসখত দেয়নি, এই রাতে চলাচলে ! তাই যাক না কদম গাছ থেকে পুয়ো গাছে । যাক না বাঁশঝাড়ের মাথার থেকে কাঠাল-জাম-জামরুল-জারুল যেদিকে খুশি চলে-ফিরে ঘুরে এই জীবনের গন্ধ সুবাস মাখুক, তাতে কার কি! এই রাতের বেলায় কত আরো নিশাচর প্রাণীরা তো আছে, তারাও ঘুরুক, ভেসে বেড়াক এইসব শীত রাতের মিহি-আলোয় প্রাণ ভরে। তাতে কার কি! ওদের কাউকে জবাবদিহি করতে হবে না তো! 

              অঘ্রাণের এই শীত রাত্তিরে তার এই জেগে থাকা ; ওই বাঁশ বনেরাও কি জেগে নেই! তারাও তো জেগে থাকে ; জেগে থেকে দেখে না কি এইসব জীবনের ছন্দ?
             হয়তো দেখে, নয়তো দেখে না কিছুই। শুধুই অভ্যাসে জিরোয় খানিকটা হয়তো বা, হয়তো বা জেগে উঠেই আবার ঘুমিয়ে পড়ে। তারপর কত রাতচড়া প্রাণীদের আসা যাওয়া চলে এমন কত রাত্তিরে কত কাল ধরে যে, সে হিসেব কেনই বা রেখে বেড়াবে তারা! 
             তার এই জেগে থেকে ঘুরে বেড়ানোর সঙ্গে কেন সে খুঁজে বেড়াচ্ছে এমন কত কিছু, যার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই ওই বাঁশঝাড়, ওই ভাম বেড়ালদের জীবনের সঙ্গে! তাহলে সেও কি এই রাতে এক দঙ্গল ভাম বেড়ালের, বাঁশজঙ্গলের মাঝে হারিয়ে যেতে চায়? 

            যত সব আজগুবিতে পেয়ে বসেছে তাকে। এর আগেও তো কতবার একা একা এসেছে সে, কই ,এমন ভাবে এমন রাতের আঁধারে ঘুরে মরতে হয়নি তো তাকে! 
             ঘুমের দোষ তার এর আগেও ছিল না যে তা তো না! সেসব সব সাথি সামলায় তার প্যাঁচে ফেলে। এমন সে সব প্যাঁচ, যাতে ঘুম আসবে না তো যাবে কোনখানে। এখানে সাথি তো নেই কাছে, তাই এত রাত্তিরের ভীমরতিরা পেয়ে বসেছে বুঝি? অথচ সেই ছিয়াশির থেকে কতবার তো এলো আর গেল, এমন দশা তো এর আগে হয়নি। যাতে এই মধ্যরাত্তিরে উঠোনের মাঝে ঘুরে বেড়াতে হয়েছিল।   
            কেন, কত রাত্তির তো এর আগেও, গৌতমের সঙ্গে বকবক করে কেটে গেছে তার! তাতে হয়তো দু'একটা সিগারেট বেশি পুড়েছে এই যা। আরও পড়ুন






         আমাদের বই



















সম্পাদক : উত্তম মাহাত
সহায়তা : অনিকেতের বন্ধুরা
অলঙ্করণের ছবি : সমীর আইচ ( আন্তর্জাল)
যোগাযোগ : হোয়াটসঅ্যাপ - ৯৯৩২৫০৫৭৮০
ইমেইল - uttamklp@gmail.com



মন্তব্যসমূহ

  1. বরাবরের মতো এবারও পত্রিকাটি খুব সুন্দর হয়েছে। সম্পাদক এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই💐

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র শিল্প ।। মুকেশ কুমার মাহাত

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র ।। মুকেশ কুমার মাহাত

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। নাচনী শিল্পীদের আলোক-চিত্র ।। সন্দীপ কুমার