সুজন পণ্ডার কবিতা
আকাশ অংশত মেঘলা ছিল
১.
একটি একটি করে শিশির বিন্দু
মাটিতে নামছে।
আরো হাজার বছরের শীত
আরো হাজার বছরের স্মৃতি।
বুকের মধ্যে জমানো
পৌষের দীর্ঘ রাত্রি।
এই আঁধার বড়ো ব্যক্তিগত।
নিভৃত এক প্রশ্নের জন্ম দেয়
ঠিক কতখানি ব্যথা পেরোলে
মারা যায় বিশ্বাস?
২.
কি দেবো তোমাকে?
আমার নিরব শ্বাস?
আমার নিঃস্ব সময়ের কিছুই
তোমাকে দেওয়ার মতো না।
অণু দিন।
ভূমিহীন অস্পষ্টতা।
আমার সঞ্চয়
সাকুল্যে শূন্য বই তো নয়।
কি দেবো তোমাকে?
আমার ভঙ্গুর অভিমান?
আমার বিছানার পাশে
পড়ে থাকা নিরব আলো
অথবা যে ছোট্ট মহাকাশ গায়ে জড়িয়েছি?
কি দেবো তোমাকে?
৩.
তোমার জন্য আমার ভালোবাসা
শিশুর নখের মতো।
শুধু নিজেই আহত হই।
বাকিটা ক্ষমতাহীন। নিষ্পাপ।
জানালার ওপাশে রোজ সকাল হয়।
গোধূলি আসে।
আলোকে মনে হয় মায়া
তোমার জন্য আমার ভালোবাসা মায়ার মতো
শুধু নিজেই মোহিত হই।
বাকিটা ক্ষমতাহীন। নিষ্পাপ।
৪.
সূর্য ডুবছে।
স্লেটের মতো রাত।
কালো। ভারী।
শেষ যাত্রী এসে দাঁড়াবে ঘাটে।
শেষ খেয়া।
নদী ছায়াহীন।
স্রোতহীন।
শেষ স্রোত আমি মুঠোতে ভরেছি।
৫.
প্রতিটি নিঃশ্বাসে
বুক উঠছে নামছে ।
এই শরীর যেন ধান ক্ষেত।
হাওয়ায় দুলছে
সোনার ফসল।
এই শরীরই নদীচর।
অজস্র ঢেউ--
জাগছে ভাঙছে।
প্রতিটি নিশ্বাসে
বুক উঠছে নামছে।
এই বুক জীর্ণ পালের মতো
ফুলে ফুলে নৌকার ভার বইছে।
কবি সুজন পণ্ডা

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন