ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র ।। জয়দেব চক্রবর্তী


























ঘোড়ামারা দ্বীপ হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সুন্দরবন এলাকার একটি দ্বীপ। দ্বীপটি বর্তমানে ভাঙ্গন সমস্যার সম্মুখীন। দ্বীপটি হুগলি নদীতে মুড়িগঙ্গা নদীর উৎস মুখে অবস্থিত। সাগর ব্লকের এই ঘোড়ামারা দ্বীপে আছে প্রায় ১২০০ পরিবারের বাস। প্রায় সাড়ে তিন হাজার ভোটার আছেন। আর জনসংখ্যা ৫ হাজারের মতো। আছে প্রাইমারি স্কুল, হাইস্কুল, পঞ্চায়েত অফিস, পোস্ট অফিস, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। আছে সুফলা চাষের জমি। একটা সচ্ছল জনপদে যা যা থাকে— তার সবই আছে। কিন্তু, দ্বীপের আয়তন ছোট হয়ে আসছে ক্রমশ! রোজই নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে তার ভূমি, তার সম্পদ। পরিবেশ দূষণ, ভূমিক্ষয়, সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতাবৃদ্ধি, এই তিনটি কারণে এই দ্বীপের অস্তিত্ব আজ প্রায় বিপন্ন। এই ছবিগুলো দিয়ে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে এবং তার ক্ষয়ে যাওয়াকে কিছুটা হলেও ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন এই সুদক্ষ আলোকচিত্র শিল্পী।
১৯৬৫ সালের ৬ই জুন কলকাতার এক ব‍্যবসায়িক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অসাধারণ এই আলোকচিত্র শিল্পী জয়দেব চক্রবর্তী। ফটোফ্রেমিং এবং বাইন্ডিং এই ছিল ওঁদের ব‍্যবসা। সেই সূত্রে ছোটোবেলা থেকেই বিভিন্ন নামী অনামী চিত্রশিল্পীদের আঁকা চিত্রকর্মের সঙ্গে একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এবং সেইসব আঁকা ছবি দেখতে দেখতে একটা ভালো লাগার জায়গা তৈরি হয়, যা জীবনকে বেঁধে দেয় একটা অন্য খাতে। বলতে গেলে এই গভীর পর্যবেক্ষণ থেকেই এক সুন্দর শিল্পীমন তৈরি হয়। তৈরি হয় এক অসাধারণ আলোকচিত্র শিল্পী। 
             দেখার বাইরেও যে একটা দেখা থাকতে পারে, সেই ছোটবেলাতেই বুঝে গিয়েছিল তাঁর শিল্পীমন। তারপর জীবনে একটু থিতু হয়ে শুরু হয় ছবি তোলা। ২০০৫ সালে সমমনষ্ক কিছু ফটোগ্ৰাফিক বন্ধু নিয়ে একটা ক্লাব তৈরী করেন। সেই ক্লাবের পথচলা আজও থামেনি। বরং তার ক্রিয়াকলাপ উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। তৈরি করে চলেছে একটা ভালোবাসা ও ভালোলাগার জায়গা।  
             বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ফটোগ্ৰাফিক সোসাইটির স‍্যালোনে ছবি পাঠিয়ে পদক আর সার্টিফিকেট লাভ শিল্পীকে আরও ঋদ্ধ করেছে।       
              ২০১৫ এবং ২০১৮ এই দুটো সালে কলকাতার গগণেন্দ্র প্রর্দশশালাতে ছবির প্রদর্শনী করেছেন। বহু মানুষের প্রশংসাও কুড়িয়েছেন তিনি। কোভিডের জন্য মাঝে প্রায় দু'বছরের মতো সময়কাল জুড়ে ছবি তোলা বন্ধ ছিল। ২০২২ সালে "Academy Of Fine Arts" -এ আবার একটা প্রদর্শনী হয়। এখানেও ওঁর সমস্ত ছবি ছবি-প্রেমীদের মন কাড়ে, প্রশংসিত হয়। বিক্রি হয় বেশ কয়েকটি আলোকচিত্র। মানুষের অকুণ্ঠ ভালোবাসা, আর ভালোলাগাই ওঁর শিল্পস্বত্তার আগামী পথের পাথেয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
             এই চিত্রশিল্পীর আলোকচিত্র যে কি তা না দেখলে বলে বোঝানো বড়োই কঠিন। গোবরে পদ্মফুল ফোটানোর দক্ষতা সম্পন্ন এই জাত শিল্পীর আলোকচিত্রগুলিতে অতি সাধারণ বিষয় সহজেই অসাধারণ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে বিমূর্ত ছবিগুলো খুব সহজেই আবিষ্ট করে তোলে দর্শকদের। এছাড়া আর কীইবা বলতে পারি। অরন্ধনের পাঠক ও দর্শকদের সামনে ওঁরই একগুচ্ছ ছবি তুলে ধরা হলো এবার। 



উত্তম মাহাত, সম্পাদক 







মন্তব্যসমূহ

  1. যাহা দেখি চোখ দিয়ে মন দিয়ে নয়।
    সেই দেখা দেখ তুমি
    অতলে গভীরে নামি,
    জগৎ মাঝারে তাহা বর্ণছটা ময়।
    ক্ষণিকের পৃথিবীতে আছে যত লেখা
    জলে কিছু, স্হলে কিছু
    ছুটে যাও পিছু, পিছু,
    দেখাও আঙ্গুল দিয়ে শতেক অদেখা।।
    শুভেচ্ছা সহ বন্ধু হিরণ্ময়।

    উত্তরমুছুন
  2. আমার খুবই পরিচিত, ছবিতে বাঁধানোর সূত্রে। যখন জানতে পারি তাঁর শিল্প কর্মের কথা ও দেখেতে পাই, তারপর আমার কাছে উনি অন্য জগতের মানুষ ও অন্য সন্মানের জায়গাতে আছেন। ওনার কাজ সম্মন্ধে মন্তব্য করা আমার পক্ষে ধৃষ্টতা হবে। খালি, চোখ ভরে দেখি, সেটাই আমার আনন্দ ও আরো যেন দেখতে পাই।
    🙏 আমার আন্তরিক ভালোবাসা, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র ।। সন্তোষ রাজগড়িয়া

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র শিল্প ।। মুকেশ কুমার মাহাত

পঞ্চম বর্ষ ।। তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ ।। ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ০২ অক্টোবর ২০২৪