পাখি মানুষের কবিতা / শুভদীপ ভট্টাচার্য
পাখি মানুষের কবিতা
শুভদীপ ভট্টাচার্য
১.
পাখিদের ঘর আছে, দেওয়াল নেই
মানুষের দেওয়াল-ই ঘর
সম্পর্কেরা পাশাপাশি আসলে একটা ঘর
অথচ, দেওয়াল আরও উঁচু হয়,
ছোঁয়াচে হয়
মানুষ বাঁধে দেওয়াল,
আর ভেঙেই ফেলে ঘর...
২.
হারানো যার স্বভাব তাকেই কি পাখি বলো ?
তাহলে মানুষও পাখি
হাত পা ছোঁড়ার বাহানায় পালক ছড়ায় বিছানাময়
মহাকাশ এক বদ্ধ জলাশয়
কচুরিপানার ভাসমান সংসারে
উড়তে চাওয়া চোখে অসংখ্য সেতু
সেতুর নিচে নদী
শ্মশানের পাশে দাউদাউ মুণ্ডকাটা লাশ
পাখিদের ডানা আছে, মানুষের পিছুটান...
৩.
একটা ঝড়ে তছনছ একটা সংসার
ঘুরে দাঁড়ানোর নাম-ই জীবন
পাখিদের মাথার ওপর আকাশ
সেখানে রামধনু ওঠে
মানুষের কংক্রিট - ছাদ
অর্থহীন উপমায় আত্মহত্যা ভেংচি কেটে যায়...
৪.
বন্ধুক আর পাখির মাঝখানে একটি পিঁপড়ের হুল
হেরে যাওয়া মানুষের চোখ আসলে ছুরি,
চোখে ঝলসে ওঠে আগুন...
পাখির চোখের বিরোধিতার দিক থেকে
মানবতা ও মানুষ শব্দ দুটিকে পাশাপাশি বসাতেই ছুরি আর আগুনের কথা ভাবি...
অথচ একমাত্র ডানার ব্যাপারে
পিঁপড়ে আর মানুষকে অনায়াসে এক লাইনে জায়গা দিতে পারি...
৫.
মানুষের ভেতর এক ঘর
ঘরের ভেতর আলো ও আল্পনা
তুলসীমঞ্চের আড়াল থেকে সন্ধ্যা নামে
মাড়ুলির গন্ধে জেগে ওঠে ভোর
কে পেতেছে সংসার
তার দুঃখের ভেতর থেকে আমি খুবলে নিয়েছি
একটুকরো হৃদপেশি...
উড়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় উঁকি দেয় আততায়ী আকাশ
উড়ে গেলেও কি আশ্রয়ের নাম ঘর
এমন সংশয়ের ভেতর জন্ম নেয় এক অন্ধকার খাঁচা...
৬.
পরিযান শিরোনামে খুলে যাচ্ছে
আশ্চর্য সংকেত
ক্ষুধা অথবা আবহাওয়া গণিত জানে না
ডানায় ক্লান্তি নামে
পা থেকে খসে পড়ে যাবতীয় শিকড়ের আয়ু
যেখানে জীবন মানে সমান্তরাল হাঁটাপথ অথবা
লিপ্তপদী সাঁতার
হুইসেলে বাজে মৃত্যু-সাইরেন...
প্রশ্ন এখনঃ আঁশবটি আর রাষ্ট্র কার ধার কত বেশি...
__________
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন