“জীবন কথার নদী"; নদী ও নারীর এক নিবিড় আখ্যান।
“জীবন কথার নদী"; নদী ও নারীর এক নিবিড় আখ্যান।
মধুপর্ণা
“জীবন কথার নদী” তে ত্রিকূট পাহাড়ের ঢালে জাত ময়ূরাক্ষ্মী নদী এবং সেই পাহাড় ঘেরা উপত্যকায় ছোট গ্রাম পুনাসির মেয়ে বিজলির জীবনের প্রবাহ থেকে যে কথকথার জন্ম হয়েছে তার উপজীব্য বার্তা হল পিতৃততান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রকৃতি ও নারী উভয়ের নিপীড়ন ও শোষণের উৎস। অধ্যাপক মলয় মুখোপাধ্যায়ের এই উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৬ সালে, অক্টোবার মাসে। সোপান পাবলিকেশন থেকে। উপন্যাসটি তিনি উৎসর্গ করেছেন পোটামোলজিস্ট সুতপা মুখোপাধ্যায়কে। বইটির প্রস্তাবনা লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের সভাপতি কল্যাণ রুদ্র। প্রচ্ছদ করেছেন দেবাশীষ সাহা। এবছর প্রকৃতিকেন্দ্রিক নারীবাদ নিয়ে যখন অল্প বিস্তর চর্চা করছি, তখন আশ্চর্যভাবেই মলয়দার বাগানে ফেব্রুয়ারীর এক চড়ুইভাতির দুপুরে বইটির সঙ্গে পরিচয় ঘটে। প্রকৃতিকেন্দ্রিক নারীবাদ বিষয়ে পূর্বে পড়া বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ নতুন করে আত্মস্থ হল, এই উপন্যাসটি পাঠের পর।
উপন্যাসটির দুটি প্রবাহ সমান্তরালে শেষ অবধি গিয়ে মিলেছে পরস্পর। এক প্রবাহের কেন্দ্রীয় চরিত্র পুনাসি গ্রামের মেয়ে বিজলি অন্য প্রবাহের নায়িকা ময়ূরাক্ষ্মী নদী স্বয়ং। একটা সময়ের পর অনুধাবন হয় এই দুটি প্রবাহ আদতে একটি প্রবাহই। আপাত ভাবে ভিন্ন মনে হলেও নদী (প্রকৃতি) ও নারী মিশে গেছে জীবনচক্রের বাধ্য অনিবার্যতায়। এই বাধ্যতার সূত্রটি কি? এই সূত্রটি একটি ক্ষমতাতন্ত্র যা নদী ও নারীকে অভ্যস্ত করতে চায় বাধ্যতায়। চালনা করতে চায় নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে। তাদের স্বাভাবিক গতিপথকে বাধা দিয়ে মোড় ঘুরিয়ে দিতে চায় নিজেদের মুনাফা ও ভোগের আয়োজনের জন্য। ভূগোলের বৈজ্ঞানিক সত্যকে উপন্যাসে যেভাবে অধ্যাপক মুখোপাধ্যায় বইয়ে দিয়েছেন তা মুগ্ধ হবার মতই। একটি নদীর জন্ম, তার কৈশোর, তারুণ্য, তার অনুভূতিপ্রবণ বিস্তার, বাঁধ আর প্রযুক্তিতে বাধাপ্রাপ্ত যন্ত্রণাকাতর নদীর ধীরে ধীরে বদলে যাওয়া, শেষ অবধি ছন্দ হারিয়ে মৃতপ্রায় নদীর অন্যের ভোগ্য হিসাবে টিকে থাকা - এই ক্রম এখানে উপস্থাপিত হয়েছে যথার্থ বিশ্লেষণ ও সহায়ক উৎস উল্লেখ সমেত। একদিকে নদীর জীবন্ত সত্তা অন্যদিকে নদীর “ব্যবহারকারী” দের কাছে তার অবজেক্টিফিকেশন – এই দুইয়ের যে বিপরীত সম্বন্ধ তার মাঝখানে নদীটি থেকে যায় অনাদৃত। এবং "ব্যবহারকারী" দের চাহিদা অনুসারে উন্নয়নের তাগাদায় বাড়তে থাকে অত্যাচার। নদীটি নিজের সত্তা হারিয়ে ফেলে। এখানে প্রকৃতির সঙ্গে এই মানুষগুলির কোনো পারস্পরিকতার সম্বন্ধ তৈরি হয় না, তৈরি হয় ভোক্তা ও অত্যাচারিতের একটি সমীকরণ। এই সমীকরণ কেন তৈরি হয় তার সূত্র ধরে এগোলে আমরা সহজেই পৌঁছে যেতে পারি একটি অবদমনমূলক মনোভঙ্গীর কাছে, যা হাতের কাছে যা পায় তাকেই অপব্যবহার করতে চায়, অথবা ক্ষমতার তারতম্যে তৎক্ষনাৎ বদলে নেয় সম্বন্ধের বয়ান। ধাতস্থ আন্তঃ সম্বন্ধের কোনো অভ্যেস বা সংস্কৃতি এখানে নেই। ভূগোলবিদ অধ্যাপক মলয় মুখোপাধ্যায় পাঁচটি নদীর উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত পায়ে হেঁটে ঘুরে এসেছেন নদীপ্রেমীদের সঙ্গে নিয়ে, নদীকে নিবিড় ভাবে পাঠ করার এই সংবেদনশীলতা উপন্যাসের সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। তিনি সূচনাংশে লিখছেন –“ ভুগোলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নদীকে নিয়ে পাঠ্যপুস্তক লেখার পাশাপাশি নদীকে ঘিরে ছোটগল্প, কবিতা এবং উপন্যাস লেখার একটাই উদ্দেশ্য আমাদের যেন নদী ব্যবহারে সংযম আসে, নদীকে দেখার দৃষ্টিকোণ যেন বদলায়।
পাহাড় ঘেরা উপত্যকায় রোদছায়া মাখা শান্ত কয়েকটা ঘর নিয়ে পুনাসি গ্রাম। সেখানে শিবলাল শর্মা আর মালতীর অভাবী সংসারে একমাত্র মেয়ে বিজলি বেড়ে ওঠে পাহাড়িয়া চঞ্চল ময়ূরাক্ষী নদীর মতই। প্রকৃতির এই দুই কন্যার জীবন লেখক পাশাপাশি এঁকেছেন নিপুণ দক্ষতায়৷ বালিকা বিজলি অসুস্থতা কাটিয়ে যেমন ধীরে ধীরে আবার জীবনীশক্তিতে পূর্ণ হয়ে উঠত তেমনি শীর্ণ নদীটিও ভরাট বর্ষার জল পেয়ে চঞ্চল। তিনি লিখছেন- “পাহাড়ের গা ধোয়া জলে নতুন খবর। শিশুনদী আনন্দে চঞ্চল। বড় হয়ে ওঠার ধাপ গ্রামের অন্যান্য কিশোরী আরতি, ফুলমনি, লক্ষ্মীদের সখ্যে বিজলির কৈশোর যেমন সমৃদ্ধ হয়ে ওঠেতেমনি নানা উপনদী এসে নদীটিকেও করে তোলে পরিণত। “আরতি আর ফুলমনির মতো ময়ূরাক্ষ্মীর কোনো কোনো উপনদী অনেক কিছু দিয়ে ময়ূরাক্ষ্মীকে সাজিয়ে তোলে। উপনদীদের কাছ থেকে ময়ূরাক্ষ্মী যেন অনেক কিছু জানতে পারে, শিক্ষা পায়। তারপর বিজলি ঋতুমতী হয়, স্বভাব বদলে যেতে থাকে ধীরে ধীরে। এদিকে আশেপাশে জমি থেকে ছুঁয়ে আসা ভৌমজলে পুষ্ট হয়ে ময়ূরাক্ষ্মী এবার অবিরাম প্রবাহ পায়। আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে নদীটি। এদিকে পাশের পাড়ার অভদ্র ছেলে গনেশের কুনজর পরে বিগুলির ওপর। তাকে ক্রমাগত উত্ত্যক্ত করতে থাকে গনেশ আর তার সাঙ্গপাঙ্গ। গনেশ, আনসার, রফিক, বিশ্বনাথ অসুস্থ জীবনবোধের অধিকারী। পাড়ার কিশোরী বা যুবতী মানেই তাদের লালসাময় চোখ ও মনোযোগ সেদিকে ধাওয়া করে। সাইকেল থামিয়ে বিজলি, আরতিদের বলে শাসিয়ে যায় “তোদের কয়েকটাকে কবে ভোগ করবে, তবে শ্যালা এই শরীরটা জুড়োবো। ভয়ে বিজলিদের হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়। বিজলিদের প্রতি কোনো মুগ্ধতা, বিশ্ময় নেই গনেশদের, শুধু একটা জঘন্য লোভ আর ক্ষমতালিপ্সা কাজ করে তাদের ভিতরে। ভৌমজলে পুষ্ট ময়ূরাক্ষ্মীর প্রতিও নজর পরে অনেকের। লেখক লিখছেন–“ মানুষের ভাবনাতে এবার ময়ূরাক্ষ্মী নদীকে ভোগ করার বাসনা তৈরি হতে শুরু করেছে। বিজলির জীবনে যেমন গনেশদের ভিড় হয়েছে, তেমনি প্রযুক্তিবিদরা ময়ূরাক্ষ্মীকে ঘিরে শুরু করে দিয়েছেন আরো বেশী করে তাৎক্ষণিক ভোগ করবার পরিকল্পনা। আধুনিক চাহিদা অপেক্ষা করতে জানে না।তাই যেমনি ভাবা তেমন কাজ।"
তিনি বর্ণনা করেছেন ময়ূরাক্ষ্মীকে বেঁধে ফেলার জন্য প্রযুক্তিবিদদের ষড়যন্ত্র। “নৌকা নামে নদীর জলে। পরিমাপ হয়- ময়ূরাক্ষ্মীর সমস্ত শরীর বেআব্রু হয়ে যায় সেইসব প্রযুক্তিবিদ আর বিজ্ঞানীদের লোভাতুর চাহনিতে। ভোগ করার ছবি ভেসে ওঠে নতুন লোকেদের চোখে আর কথায়"। অন্যত্র লিখছেন, “প্রযুক্তিবিদরা ছক কষে ময়ূরাক্ষ্মীকে নিজের মতন করে ভোগ করার সব কৌশল ঠিক করে ফেলে"। তিনি আরো বর্ণনা করছেন -"দু পাশে পাহাড়ের ফাঁকে ময়ূরাক্ষ্মীকে আটকে ধরেলে পালাতে পারবে না সে। ধরা দিতেই হবে তাকে---যত কষ্টই হোক। তাতে ভোগকারীদের কোনো ক্ষতি হবে না। শরীর পাল্টিয়ে যাবে ময়ূরাক্ষ্মীর, ক্ষত তৈরি হবে কিশোরী শরীরে। তাতে অবশ্য কিছু যায় আসে না প্রযুক্তিবিদদের বা পরিকল্পনাকারীদের"। এইভাবে একদিকে যেমন ময়ূরাক্ষ্মীকে বেঁধে ফেলে তার বাধ্য স্রোতে চালানোর চেষ্টা চলতে থাকে তেমনি বিজলিকেও গ্রাস করার চেষ্টা করতে থাকে গনেশদের দল। পড়তে পড়তে গভীর ভাবে কয়েকটা লাইনের কাছে এসে থেকে দাঁড়াতে হয়, পড়ে দেখতে হয় লাইন গুলো আরেকবার যখন ঔপন্যাসিক ময়ূরাক্ষ্মী নদীর ওপর বাঁধ দেওয়ার সমান্তরালে বিজলির সঙ্গে ঘটে যাওয়া বিপদের কথা বর্ণনা করেন-“যেমন গনেশেরা একবারের শরীর সুখের জন্য একটা মস্ত জীবনে গভীর ক্ষত করতে ছাড়ে না। বোঝার চেষ্টাও করে না। জীবনবোধ এত ভোঁতা যে একটা সুন্দর ভাবনা, বিজলিকে রেহাই দেওয়া বা শরীরের বাহ্যিক সুখের জন্য উপকরণ খুঁজে বার করবার মতো স্হৈর্য গনেশ, আনসার, বা রতনদের নেই। যা শিখেছি সেটাই ভোগের অস্ত্রাচটজলদি মুনাফা। ওদের কাছে শরীর সম্ভোগই শেষ কথা। ঠিক যেমন ময়ূরাক্ষীকে বাঁধ দেওয়াতে কোথায় কতটা ক্ষতি হবে তার শরীরে বা মনে তার হিসাব করেন না। “চিনিকলের ভাঙা বাড়িটার দিকে বিজলিকে ধর্ষণ করে গণেশরা। এদিকে মশানজোড়ের কাছে ময়ূরাক্ষ্মীর শরীরে লোহার পিলার ঢোকানোর কাজ শেষ। বিজলি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। ক্রমে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। “দিন যায়, ধীরে ধীরে বিজলির একটা শক্ত মন তৈরি হয়। একই ভাবে মশানজোড় বাঁধের ঠিক পিছনটাতে স্তর হয়ে জমা হতে থাকে পলিমাটি। আশেপাশের পাহাড় থেকে অজস্র ঘটনা যেন তির তির করে ময়ূরাক্ষ্মীর মনের পাত্রে জমা হতে থাকে--- থমকে থাকা বেমানান স্মৃতি। মানুষের বিবেচনাতে কখনও কখনও জল ছাড়া হয় সেইটুকু জলেই কোনোক্রমে পথ চলতে শুরু করে ময়ূরাক্ষ্মী। তারপর লেখক যখন লেখেন- " ময়ূরাক্ষ্মীর হাঁটা চলাতে ধরা পড়ে শারিরীক অপমানের ছাপ। মানুষের অত্যাচারের কথা"। অথবা “ময়ূরাক্ষ্মী চেষ্টা করে নিজের মতো চলতে কিন্তু শরীরে তার বাঁধ বাঁধার গল্প অনেকটা পথ পেরোবার পরও লেগে থাকে। কিছুতেই ঝেড়ে ফেলতে পারে না। ভুলতেও পারে না। শুধু যেন বেঁচে থাকবার জন্য বাঁচা। মানচিত্রে অধিকারটুকু টিকিয়ে রাখা--- অনেকটা বিজলির মতো। বিজলি যেমন সমস্ত কিছুই অভ্যাস মতো করে চলে। সকলের সঙ্গে থাকে কিন্তু অতীতের ঘটনাটা কিছুতেই ভুলতে পারে না। শুধু বেঁচে থাকবার জন্য বাঁচা। জীবন – ছন্দ হারিয়ে অন্য জীবনকে নিয়ে টিকে থাকা সকলের মাঝখানে।"
লেখক একদিকে প্রকৃতিকে অন্যদিকে নারীর বাস্তবতাকে চিত্রিত করেছেন আশ্চর্য সংবেদনশীলতা আর বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণের সূক্ষ্ম বুননে। সাহিত্যের ছাত্র হিসাবে নদী বিষয়ে অসংখ্য গল্প উপন্যাসের সঙ্গে পরিচিতি ঘটেছে। তিতাস একটি নদীর নাম, ইছামতী, তিস্তাপাড়ের বৃত্তান্ত আরো বেশ কিছু। যেখানে নদীর স্বতন্ত্র অস্তিত্ব মানুষের সমাজের সঙ্গে অথবা পাশে নির্মিত হয়েছে। সেই পাঠে অধ্যাপক মলয় মুখোপাধ্যায়ের “জীবন কথার নদী" আরো একটি সংযোজন যেখানে নদী স্বয়ং তার জীবন্ত অস্তিত্ব নিয়ে কেন্দ্রিয় চরিত্র হিসাবে বিরাজমান। লেখক নদী আর নারীকে চিনিয়েছেন প্রকৃতির অচ্ছেদ্য অস্তিত্ব হিসাবে। আর তার ওপর আধিপত্য বিস্তারকারী এক প্রকার ক্ষমতালিপ্সা চিহ্নিত করেছেন। নদী ও নারীকে একই মানসপ্রবনতা বেঁধে ফেলে ভোগ করতে চায়। তার নিজস্ব সত্ত্বা, নিজস্ব গতিপ্রবাহকে স্তব্ধ করে চালনা করতে চায় নিজের ইচ্ছা ও স্বার্থানুসারে। তার নিজস্ব ছন্দ তাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। এই অবদমন একটি বিশেষ মনোভঙ্গীজাত, একই লিপ্সার উৎস থেকে প্রকৃতি ও নারীকে বেঁধে ফেলার ও অবজেক্ট হিসাবে গণ্য করার বাসনা তৈরি হয়, যেখানে তাদের সত্ত্বা অস্বীকৃত থেকে যায়। পুরুষতন্ত্র এবং কর্পোরেট এই দুইয়ের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ এবং তারা যুদ্ধ ঘোষনা করে বা অধিকার কায়েম করতে চায় নারী এবং প্রকৃতির ওপর, যারা নিবিষ্ঠ ভাবে সম্পর্কিত। এক ধরনের বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও মনোভঙ্গি পরিচালনা করে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তা এবং সমাজ, প্রকৃতির প্রতি আমাদের ব্যবহার। প্রকৃতিকেন্দ্রিক নারীবাদ সেই ভিত্তিকে সংস্কারের কথা বলে। অধ্যাপক মুখোপাধ্যায় “জীবন কথার নদী" উপন্যাসে এই মানসপ্রবনতাকে চিহ্নিত করেছেন এবং প্রকৃতি ও নারীর প্রতি অপব্যবহারের ক্ষেত্র দুটিকে সমান্তরাল দুটি প্রবাহে বিধৃত করেছেন যাতে ক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে একটি যোগসূত্র। কোন অবস্থান থেকে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে তার ভিত্তিতে বদলে যায় দৃষ্টিকোন এবং বয়ানের ভঙ্গী। এই অবস্থানের বিশেষত্বটি অত্যন্ত জরুরি। এই উপন্যাসে লেখক নদী ও নারীর কাছ থেকে তাদের কথা, তাদের অনুভূতি, তাদের যন্ত্রণাবিদ্ধ অভিজ্ঞতা কান পেতে শুনেছেন তাদের দৃষ্টিকোন থেকে। যার ফলে একদিকে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে আধিপত্যকামী ও অবদমনকারী একটি ক্ষমতা বিন্যাস, অন্যদিকে নদী ও নারীর নিজস্ব জীবনের ছবি। সর্বোপরি যে কথা বলার, প্রকৃতিকেন্দ্রিক নারীবাদের এক নিবিড় পাঠ হিসাবে ভূগোলবিদ মলয় মুখোপাধ্যায়ের “জীবন কথার নদী" একটি অনন্য সংযোজন।
তথ্যসূত্র
১। মুখোপাধায়, মলয়, "জীবন কথার নদী", সোপান, ২০৬ বিধান সরণী, কলকাতা-৭০০০০৬, পৃষ্ঠা- ২২
২। তদেব, পু-২৭
৩। তদেব, পৃ-৪০
৪। দেব, পৃ-৪১
৫। তদেব, পৃ-88
৬। তদেব, পৃ- ৪৯
৭। তদেব, পৃ- ৫৪
৮। তদেব, পৃ-৫৪
মধুপর্ণা কর্মকার। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবীবিদ্যা চর্চাকেন্দ্রে গবেষণা করেন। লিখেছেন - ' গার্লস হস্টেল ; আবাসিক নারীর মানসভূমি।'(২০১৮)
তাঁর ব্লগ লিঙ্কে প্রবেশ করুন
তাঁর লিঙ্কট্রি লিঙ্কে প্রবেশ করুন
মধুপর্ণার আগের সংস্করণের লেখা পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন