দ্বিতীয় বর্ষ ।। বিংশতি ওয়েব সংস্করণ ।। ৩ মাঘ ১৪২৮ ।। ১৭ জানুয়ারি ২০২২




রেল মন্ত্রী পাল্টায়। একটার পর একটা বাজেট পেশ হয়। নানা চমক দেওয়া হয় বাজেটে। ভাড়াও বাড়ানো হয় ফি-বছর বাজারের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে। কিন্তু পুরোনো বয়স্ক কোচগুলোই যাত্রী বহন করতে থাকে বছরের পর বছর। মান্ধাতার আমলের নীল ট্রেনের উপর হলুদ রং করে যুবক বানানোর চেষ্টা চলতে থাকে নানাভাবে।
         যে দেশে ৪০ কিমি গতিবেগ বিশিষ্ট ট্রেন অনায়াসে পাল্টি হয়ে যায় ! সেই দেশে ঘন্টায় ৩০০ কিমি গতিবেগের বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন দেখানো হয় কিভাবে ? এই স্বপ্ন কি সত্যিই দেখা উচিত এখানকার ক্ষমতাসীন সরকারের ? নাকি যে সিষ্টেম চালু রয়েছে সেই সিষ্টেমকে প্রথমে পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষিত করে তোলার দিকে এগোনো উচিত ?
              আমাদের দেশে ভোট বড়ো বালাই। ভোটের জন্য যেখানে করোনা ছড়িয়ে পড়ার ১০০% সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন জায়গাতে মিটিং মিছিল করা হয়, বড়ো বড়ো উৎসব অনুষ্ঠান করার ঢালাও অনুমতি দেওয়া হয়, সেখানে রেলের যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হবে এ আর এমন কি কথা!
              নেতারা বুঝতে পেরেছে ; এই দেশে রাম নামে, শ্যাম নামে, রাধা নামে ভোট পাওয়া যায়। সুরক্ষা, সুশাসন, ভালো প্রশাসন, বা জনগণের সঙ্গে সমান্তরাল ভালো ব্যবহারের দরকার কি, দরকার কি মানুষের ভালো মন্দের খবর রাখার ?
               তাই একটা রেল দুর্ঘটনা যখন ঘটে আমরা প্রত্যেকে একটা ধাক্কা খাই। সোশ্যাল মিডিয়াতে সরগোল করি। নেতারাও সুরক্ষা বাড়ানোর নানা প্রতিশ্রুতি দেয়। আর কিছুদিন যেতে না যেতেই সেই প্রতিশ্রুতি ভোলানোর জন্য অনেক অনেক ইস্যু নিয়ে আসে আমাদের সামনে। যাতে সেই ধাক্কাটা মিলিয়ে যায়। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু থেকে সরে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ার টাইম লাইন থেকেও উধাও হয়ে যায় এইসব প্রতিবাদী সুরগুলো। সকলেই ব্যস্ত হয়ে উঠি নিত্য নৈমিত্তিক জীবন যাপনে। ফলে দুর্ঘটনায় যে সকল পরিবারগুলোর রোজগেরে মানুষগুলো চলে যায়, সমস্যাটা কুক্ষিগত হয়ে ওঠে সেইসব পরিবারগুলোর মধ্যেই। 
              ভারতবর্ষের মতো গরীব দেশে ট্রেন হল লাইফ লাইন। একে যতক্ষণ না সুরক্ষিত করা হচ্ছে ততক্ষণ একে একে বলিতে চড়তে থাকবো আমরা। দুর্ঘটনায় বিচ্ছিন্ন হতে থাকবো বাবা মা ভাই বোন স্বামী সন্তানের কাছ থেকে। আর নেতারা এভাবেই চালিয়ে যেতে থাকবে ভেলকিবাজি। তাই সকলের জেগে ওঠা ছাড়া গতি নেই। জেগে ওঠো, না হয় প্রস্তুত হও চাপা পড়ার জন্য। আজ না হয় কাল, লাইনে দাঁড়িয়ে আছো যখন রেশন তো পাবেই।


উত্তম মাহাত, সম্পাদক





______________________________________________
যাঁদের লেখায় সমৃদ্ধ হলো এই সংস্করণ
______________________________________________
পঙ্কজ মান্না / শর্বরী চৌধুরী / ফজলুররহমান বাবুল / সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় / সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় / উৎপল দাস / সৌরভ লায়েক / দেবাশীষ সরখেল / সন্দীপ মুখোপাধ্যায় / মধুপর্ণা কর্মকার / দীপংকর রায়
______________________________________________



পঙ্কজ মান্নার অণু-কবিতা

ভোরের দ্বিপদী 
                         
১)
বলবো বলেও হয়নি বলা
ধরবো বলেও হয়নি ধরা হাত
আমার আয়ুর নীল শতদল পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রপাত

২)
এমনতর পুকুর যদি বুকের ভেতর থাকে
তেষ্টা নিয়ে মরতে হয় না জীবনপথের বাঁকে

৩)
তোমার কাছে যেতে গিয়ে সাতটি সাগর 
এক-ডজন-এক নদী
সোনার গাঁয়ে রোদ পোহাতাম এমন সুবোধ সেতু থাকতো যদি...

৪)
মন পুড়ে যায়,বোধও পোড়ে,ভাঙছে সুখের ঘর
আর কষ্ট কত তীব্র হলে তোমার বুকে বিঁধবে গো,ঈশ্বর!

৫)
এতদিন কাছে ছিলে
তোমার মনের আলোয় তোমাকে খুঁজিনি
তোমার মতন করে তোমাকে বুঝিনি

৬)
রাত-চেরা এক কান্না ওঠে বুকের ভেতর রোজ
এই মনখারাপের লবণ জলে জীবন মহাভোজ

৭)
কররেখাগুলো বাংলার নদী,কপাল সোঁদরবন
হৃদ্ ছলছল ভাগীরথীধারা,মন যে বৃন্দাবন

৮)
ডুব সাঁতারে জীবন হলাম পার
হাই জাম্পে মৃত্যু ডিঙিয়েছি
তোর মতো এক বৃক্ষ ছিলো পাশে
নইলে সবই হতো যে ছারখার

৯)
মায়ের চোখের জল অনুবাদে অতল সাগর...
মা-কে কেন ভুল বোঝো,মা কখনো হয়ে যায় পর !

১০)
কবিতা আমার জলজ কুসুম রোদবেলা মেঘ বারিস
অসময়ে সে নোয়ার নৌকো জীবনও পেরোতে পারি

১১)
রাত থেমে যায় গান্ধীঘাটে,তার পরে তো ভোর 
ওপার নাকি জ্যোৎস্নাস্নানে মন সেরেছে, তোর!




                         

             শর্বরী চৌধুরীর কবিতা

                                পিচ্ছিল 

পিচ্ছিল মেধার জন্ম দিয়ে মরে গেছে হলুদ সকাল। আদিম বন্যার মতো ভাসে সকল ইশারা। কৌতুকপ্রবণ শ্রমণ কেড়ে নেয় যত সন্ন্যাস। 
প্রতিধ্বনি ব্যঙ্গ করে। 
অন্তহীন ক্ষুধা চারিয়ে যায় প্রবৃত্তির ঘরে ঘরে। 


 
                             বানভাসি
                          
রূপসী বিকেল ঘোর লাগায়। 
বেলুন চুপসে যাচ্ছে মুহূর্তের অসতর্কতায়। 
রমণীর এলো খোঁপা খুলে গিয়ে নামায় অন্ধকার। ধূসরতা মগ্ন বালক। উপহাসে পাথর হয় বিচ্যুত স্তবকেরা। পরীর ডানায় লেখা আজন্মকালের বানভাসির কথা। 







সময়ের গান ও অন্যান্য কবিতা


ফজলুররহমান বাবুল

সময়ের গান  

তোমার আছে সময়, আছে স্বপ্ন, আছে বাড়ি এবং ঘর। বাড়ির ভিতর ঘরের ভিতর থাকবে তুমি কত বছর? সময় কমে অষ্টপ্রহর। আর, তুমি দিচ্ছ কারে রং-বেদনায় পাড়ি? তোমার আছে নয়াবাড়ি, পুরানবাড়ি, জঙ্গলবাড়ি। সকল বাড়ির পথেঘাটে সময় চলে ধীরিধীরি। আসলেই কি ধীরিধীরি? ডানে-বাঁয়ে সামনে-পিছে অনেক খবর, অনেক খবর। গোঁসাই থাকেন মনের ভিতর? সোজা হয়ে হাঁটবে তুমি মাটির ওপর, পথের ওপর। কমছে আয়ু বছর-বছর, অষ্টপ্রহর। জাগতে পারো ঘুমের ভিতর? আজকে তোমায় উলটাপথে হাঁটতে ডাকেন কোন মহারাজ? বৎস তোমার, বন্ধু তোমার, একটুখানি ধরুক তোমায়। দাঁড় টেনেছ নদীর বুকে জলের ওপর ঠান্ডা-হাওয়ায় গরম-হাওয়ায়। ঢাকা কিংবা উদলা-সময় অনেক গেছে টালবাহানায়। ঘরের ভিতর, পথেঘাটে, রৌদ্র-হাওয়ায় আছ তুমি অন্ধকারে। অন্ধকারে, অন্ধকারে। কোথাও তুমি বসে থাকলে আকাশ মিশে মাটির সঙ্গে রৌদ্রভারে। আকাশ হবে তোমার মতো, তেমন-কিছু চাও কি তুমি? চাইতে পারো, চাইতে পারো। বনে-বনে সবুজ-পাতা, হলুদ-পাতা, ঝরছে পাতা অহরহ। ঘুরছ তুমি, ঘোরো তুমি। জানো তুমি, ঘুরেফিরে ধরা তোমার খেতেই হবে পুলিশবিহীন অচিনপুরে। সকালবেলা দুপুরবেলা সন্ধেবেলা থাকবে তুমি অন্ধকারে? অন্ধকারে? অন্ধকারে?

 

স্বপ্নের গান

পৃথিবীটা গোলাকার বলেই ভাবছ কি আবার দেখা হল তোমার-আমার? কখনও কি আশা করেছিলে গভীর-কালো-রাত্রি থেকে ভোরের আলো দেখতে পাওয়ার? অনেক-বছর পরে আবার দেখা তোমার-আমার। সময় তো নেই বসে থাকার। আজকে বরং তুমি কিছু মসলা বাটো; আমি না-হয় কয়লা-কিছু কুড়িয়ে নিয়ে চুলার ভিতর আগুন জ্বালাই। আজকে না-হয় রাজবিধানে রাঁধি খিচুড়ি। রাঁধাবাড়াও শিল্প-কিছু। মানুষ রাঁধে কতকিছু। খিচুড়িটা রেঁধেই ফেলি তোমার সঙ্গে এবার। পথের ওপর, স্বপ্নের ভিতর ঘুরেছি-যে কতশত ক্ষুধা-তৃষ্ণায়, তোমার দেখা পাওয়ার আশায়। আজকে আমরা জ্বালব কোনও নতুন পিদিম। স্বপ্ন বড়ো আদিম। বৃষ্টি এবং রোদ্দুরে আমরা ছিলাম; আমরা আছি একলা কিংবা ভিড়ের ভিতর। সময় যখন ফুরিয়ে যাবে, আমরা তখন করবটা কী? কোন পথেই-বা হাঁটব তখন? দেখব কারে জিগ্যেস করে? আরও কবিতা পড়ুন

 




সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা

বাংলা দেশ


যেইখানে শুরু হলো
সেখানেই যদি হয় শেষ
যা আজ বিদেশ বলো
তাই হোক নাহয় স্বদেশ....



কলমীলতা ডিঙোবেই বেড়া
আল ভেঙে দেবেই গেরিলা
কারফিউ দিক কড়া নাড়া
মাটি মানবে না আঁকড় —



অ-বা-ধ্য-তা

হৃদয়-জমিনে জাগে বিষ
রক্তে ভেজে আমন ও মাটি
ফৌজীর ঠোঁট দিলে শিস
রক্তে লেখে দুখিনী আখর:



স্বা-ধী-ন-তা

এক ভাগ মাটি তার 
তিন ভাগ জল
যে জমিন ভেসে থাকে 
আমাদের স্থল

এক ভাগ মাটি তার 
তিন ভাগ পানি
যে নদীরা ভেসে যায় 
আমাদেরই জানি






সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা


সন্ধ্যামানবী ১

বালিহাঁসের চোখের মতো সন্ধ্যা নেমে আসে। পুরানো ডোবার জলে গুলে যায় তালগাছের ছায়া। দরজা খুলে তুমি বসে আছো উদাস। ক্রমশ আবছা হচ্ছে চশমার কাঁচ। এলোচুলে অন্ধকার নামছে আবহমান। বিপরীতে জ্বলে উঠছে অ্যাম্বুলেন্স রঙের শাড়ি। শূন্য শূন্য দুহাত। এমন চিত্রকল্পহীন দৃশ্যের ভেতর, নিঃশব্দ কুরে কুরে পাথরের মূর্তি গড়ছেন রামকিঙ্কর। 

ছাতিমগাছের থেকে হাওয়া ওঠে। গন্ধহীন ফুটে ওঠে একটি দুটি মাধবীলতা। একে একে ঘরে ফেরে সব পোষা হাঁস। 

অনেকদূরের মাঠ থেকে দু পায়ে ধুলো মেখে বাবা আসে না আর। 


সন্ধ্যামানবী ২

সন্ধ্যার ছায়া নেমে এলে, একা একা মুখ দেখে বিষাদপুকুর। অথৈ স্তব্ধতা ছুঁয়ে বসে আছো _তুমি এক সাঁতার ভুলে যাওয়া মা রাজহাঁস। এ তুলনায় সরস্বতী নেই। অপার শূন্যতা আছে। শূন্য দৃষ্টি চোখে কাকে খুঁজে বেড়াও আরো কিছু শূন্যের ভেতর? জলশরীর নিয়ে যে হেঁটে গেল একা একা আগুনের দিকে, ফিরবে না জেনেও কেন তার নাম ধরে ডাকো অকারণ? 

এই ধ্যানমগ্নতা ভেঙে  ডাঙায় ওঠাতে পারি না কিছুতেই। তাকাতে পারি না যেকোন সহজ রঙে। এত অসহ্য সাদা _আমার চোখ পুড়ে যায় বারবার।                                                  






আচ্ছন্ন

উৎপল দাস

সন্ধ্যা নামতেই ভিড় রাস্তাটা হারিয়ে গেল । 
দূরে একটা আলো ---
কারও বারান্দার, নাকি বন্ধুর দোকানের?

বুঝে ওঠা দায়, কুয়াশায়।

রাতের আড্ডা নেই,
জিনিস কিনতে বেরিয়েছি তবু। 

সকালে এখানেই ছয়জন  
জড়ো হয়েছিলাম। 

পাশের চা দোকানে  
চায়ের অর্ডার দেওয়া হয়েছিল ---
দেরি দেখে, প্রথমে সবুজ চলে গেল বাজারের 
দিকে। তারপর নীল... তারপর
আমিও বাড়ি চলে এলাম।

স্নান করবো বলে ।

চা দোকানটা এখনও খোলা ,
বন্ধুর দোকানটাও ...







সারিয়ে উঠে ক্ষত

সৌরভ লায়েক

যারা ছেড়ে গেল ফিরবে না সেভাবে
যেভাবে রেখে গেল বিদ্ধস্ত 
                               যুদ্ধ পরবর্তী আমাদের
তারা ফিরে এসে পাবেও না আর

ধীরে ধীরে এই যে সারিয়ে নিলাম অশ্রু-ওষুধে

তারপর সন্দেহ হয় 
শামুক - শামুক - পঁচা শামুকে পা কাটার ভয়

বুঝতে পারি না ঠিক একটি দরজা বন্ধ হলেই কি
পৃথিবীর মস্ত উঠোন দুহাত মেলে দাঁড়ায় 
 বিধিনিষেধের ক্ষত সারিয়ে নিতে এগিয়ে দেয় মলম ?

এরপর একদিন ঠিকই বুঝে উঠি 
এই জীবনে মা ও মৃত্যু ছাড়া আমাদের জন্য 
কেউ চিরদিন থাকে না অপেক্ষা করে

হে জীবন ফিরে এসে দেখে যেও
মা ও মৃত্যু শুধু প্রতিক্ষায় দাঁড়িয়ে দুয়ারে






পত্রাঘাত ও পাথর

দেবাশীষ সরখেল


তখন মুখপুস্তিকা ছিলনা
 ছিল না হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেঞ্জার  
তবে সান্ধ্য টিউশন ছিল
 ছিল অন্ধকারে সাইকেলে মুখোমুখি  
 একটি সাইকেল অন্য সাইকেলের  হ্যান্ডেল অবলীলায়   টাচ করতো ।
 মানুষের স্পর্শসুখ  অতটা সহজ লভ্য নয়  
যেমন সাইকেল ।
  পত্রবাহক বন্ধু ও বান্ধবী ছিল
 একটি হিরণ্য স্রোত ছিল
 মন যমুনায় উথালি পাথালি ঢেউ ।
 যেখানে রেখেছো গোপন চিঠি  সে যেন রত্নাগার 
 হিরণ্য খচিত দিনরাত ।

  কেটে গেল দিন মাস বছর
 জীবন প্রবাহের অনিবার্য দাবি ।  
যন্ত্রণার প্লাবন হয়ে আরও এক পত্র এলো ।
 পত্রের চারিপাশে  হলুদ বরণ টিপছাপ । 
 প্রজাপতি ফাগুনের হাওয়া  চিত্রিত প্রফুল্ল মালিকা জুড়ে  অপরূপ মিলনগন্ধ ।
 সেই দিন থেকে একা একা তুমিই তোমার শবদেহ ধারন করে আছো । 
 মানুষ পাথর হয় ।  
জীবিকার টানে পাথরও
মানুষ হয়ে  
জনপদে প্রতিদিন  চলমান থাকে ।




সন্দীপ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা

১.
মোহনপুর
                  
     
পথ চলতে চলতে
পথ-চলতি মানুষের সাথে দেখা 
প্রকৃতির সাথে দেখা! 

কতদিন পথে হাঁটিনি 
কতদিন আকাশ দেখিনি!

এবার পথ চলতে চলতে
মানুষ দেখবো, প্রকৃতি দেখবো
আকাশ দেখবো!

কতদিন বাজেনি সুর 
সমস্ত বাঁধন খুলে
চলো ! বেরিয়ে পড়ি 
বেরিয়ে পড়ি
অজানা অলীক দেশ 
মোহনপুর! মোহনপুর!



২.
রামধনু 
                  

পয়লা মাঘ
আখান যাত্রা , 
গ্রাম দেবতার পূজো

পয়লা মাঘ 
মেলা ...
 মানুষের মেলা ...
প্রকৃতির মেলা 

চারদিকে কত রঙ্ 
রঙের খেলা 

রঙের খেলায়
মিশেছি কি আমি ! 

মিশেছি কি -
আকাশে বাতাসে
রামধনু হয়ে !






পাবলিক স্পেস, বাহ্যিক বিচরণ ভূমির লিঙ্গরাজনীতি

(দ্বিতীয় পর্ব)

মধুপর্ণা কর্মকার

‘পাবলিক’ এর জেন্ডার কি? কারা আসলে এই ‘পাবলিক’?

আর ‘পাবলিক স্পেস' এ কাদের অলিখিত দখল ? এই 'পাবলিক স্পেস' এর পরিধি খুব অদ্ভুত। শুধুমাত্র স্থানিক বিস্তার নয়, স্থান এবং সময়ের দ্বিপাক্ষিক সমন্বয়ে তৈরি হয় 'পাবলিক স্পেস' এর চরিত্র এবং বৈশিষ্ট্য। এই পরিসরে কর্ম সূত্রে, ইচ্ছা সূত্রে মানুষজনের চলাচল। এই পরিসরের অভিজ্ঞতা সামাজিক অবস্থান অনুসারে আলাদা আলাদা ভাবে হয়। লিঙ্গ বৈষম্যের সুবিস্তৃত জটিল বিন্যাস দ্বারা এই স্পেসও অধিকৃত। এই নির্মিত পরিসর একজন নারী এবং একজন পুরুষকে ভিন্ন ভাবে দেখে এবং ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকায় প্রত্যাশা করে। যে পরিসর সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য সেখানে এই “সর্বসাধারন" এর একাংশের প্রতি ঝুঁকে থাকে পক্ষপাতের পাল্লা। কারণ পিতৃতান্ত্রিক সমাজ জন্মসূত্রে এবং বিশেষ লিঙ্গ পরিচয়ের জন্য বাড়তি কিছু সুবিধা ও ক্ষমতা ব্যবহারের বন্দোবস্ত করে রেখেছে। তাই সর্বসাধারনের ব্যবহার্য জায়গায় তাদের আস্ফালন আর সুবিধাভোগ চোখে পড়ার মত বেশি। 'ঘর' এবং 'ভিতরের ঘর' থেকে যখন কাজে বা ইচ্ছায় মেয়েরা বাইরে আসে, তাদের পড়তে হয় নানাবিধ সমস্যায়। আরও পড়ুন





________________________________________________

ঔপন্যাসিক দীপংকর রায়ের ধারাবাহিক উপন্যাস---
"জলশ্যাওলার বিরহকথা" --- এবার একাদশতম পর্ব
________________________________

জলশ্যাওলার বিরহকথা

দীপংকর রায়


               বলা চলে অলিখিত এক চুক্তিনামায় সাক্ষর হয়ে গেল দাদু আর আমার নাম । আমরা উভয়ে উভয়কে খানিকটা জীবনের নিশ্চয়তার গোপন দেনাপাওনায় বেঁধে ফেললাম যেন। আমার নানা শূন্যস্থান পূরণে তার সাহারা পেতে থাকা কীভাবে যেন ভুলিয়ে দিল তার আর আমার মাঝখানের তথাকথিত সম্পর্কের দূরত্বকে------। 
             মানুষের স্বভাব, সে পেলে আস্তে আস্তে নিজেকে ছেড়ে দেয় খানিকটা । মনে করে সত্যিকারের সম্পর্ক তো এটাই ; এবং সেইসব অধিকারে কোথাও যদি ফিরতি পথের কোনো দিশা না দেওয়া থাকে , তাহলে সেই পরিসর বাড়তে বাড়তে ঠিক এতটাই বেড়ে যায় ------ যা আজ বেড়ে গেছে বলে মনে হলো। যেন আজ আর ওদের দেওয়া দুই পাঁচ হাজারকে আমি আর ধার বলেও ভাবতে পারি না। আর এই দাবি , অধিকার বাড়ানোর পেছনে তাদেরই ভূমিকা বরাবরই আমার ইচ্ছা অনিচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে তাদের মতো করে। তাদের এই নিয়ন্ত্রণ আন্তরিক হোক আর বৈষয়িক হোক, যেটাই হোক, আমাকে সে কথা বুঝতে দেয়নি হয়তো নানা আচার আচরণ থেকেও সবটা পরিষ্কার ভাবে। 
              আর আজ, এই যে এই মুহূর্তে যে ঘটনা ঘটল তার জন্যে কি সত্যিই আমার অভিমান করা চলে ? আরও পড়ুন




আমাদের বই
















সম্পাদক : উত্তম মাহাত
সহায়তা : অনিকেতের বন্ধুরা
অলঙ্করণের ছবি : যোগেন চৌধুরী ( আন্তর্জাল থেকে )
যোগাযোগ : হোয়াটসঅ্যাপ - ৯৯৩২৫০৬৭৮০
ইমেইল - uttamklp@gmail.com





মন্তব্যসমূহ

  1. এবারের অরন্ধন খুব ভালো হয়েছে। সজ্জায় আর মজ্জাতেও। বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতাদুটি।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র ।। সন্তোষ রাজগড়িয়া

ছবি প্রদর্শ-শালা ।। আলোকচিত্র শিল্প ।। মুকেশ কুমার মাহাত

পঞ্চম বর্ষ ।। তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ ।। ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ০২ অক্টোবর ২০২৪